ভ্রমণের দুনিয়ায় নতুন মোড়: চ্যালেঞ্জিং অভিজ্ঞতার দিকে ঝুঁকছে বিশ্ব।
করোনাভাইরাস মহামারীর ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই যেন ভ্রমণের চাহিদা বেড়েছে কয়েকগুণ। মানুষ এখন শুধু সমুদ্রের তীরে আরাম করা কিংবা পরিচিত গন্তব্যে ঘুরতেই ভালোবাসে না, বরং তারা এমন সব অভিজ্ঞতার দিকে ঝুঁকছে যা একইসঙ্গে তাদের মানসিক এবং শারীরিক চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলবে, আবার দিগন্তকেও প্রসারিত করবে।
সম্প্রতি এক গবেষণায় জানা গেছে, শুধু আমেরিকাতেই আগামী বছর, অর্থাৎ ২০২৫ সালে, ভ্রমণ খাতে ১.৩৫ ট্রিলিয়ন ডলার খরচ করার সম্ভাবনা রয়েছে। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় হিসাব করলে বিশাল একটা অঙ্ক!
ভ্রমণের এই নতুন ধারণার সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে পর্যটকদের পছন্দের ধরনেও এসেছে পরিবর্তন। গন্তব্য নির্বাচনের ক্ষেত্রেও দেখা যাচ্ছে ভিন্নতা। কেউ আফ্রিকার গহীন জঙ্গলে বন্য জীবন উপভোগ করতে চাইছে, আবার কেউ আইসল্যান্ডের বিশাল হিমবাহের পাশ দিয়ে হেঁটে আসার অভিজ্ঞতা নিতে আগ্রহী।
এইসব দুঃসাহসিক অভিজ্ঞতার পাশাপাশি, ভ্রমণের সময় পুরোনো দিনের আকর্ষণীয় জিনিস খুঁজে বের করারও একটা প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, যা ভ্রমণকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলছে।
পর্যটকদের এই নতুন রুচি পরিবর্তনের কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানুষ এখন নিছক আনন্দ খোঁজার চেয়ে অভিজ্ঞতা অর্জনকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। তারা এমন সব জায়গায় যেতে চায় যেখানে প্রকৃতির আসল রূপ দেখা যায়, অথবা সংস্কৃতির গভীরতা অনুভব করা যায়।
এর মাধ্যমে তারা নিজেদের নতুনভাবে আবিষ্কার করতে চায় এবং জীবনের ভিন্ন স্বাদ পেতে চায়।
এই পরিবর্তনের ঢেউ লেগেছে আমাদের দেশেও। বাংলাদেশের পর্যটকদের মধ্যেও এখন নতুন গন্তব্যের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। বিশেষ করে যারা ট্রেকিং বা অ্যাডভেঞ্চার ভালোবাসেন, তারা দেশের বিভিন্ন পাহাড়ি অঞ্চলে, যেমন বান্দরবান কিংবা রাঙামাটিতে ভ্রমণে যাচ্ছেন।
এছাড়া, সুন্দরবনের মতো জায়গায়ও পর্যটকদের আনাগোনা বাড়ছে, যেখানে তারা প্রকৃতির কাছাকাছি আসার সুযোগ পান।
ভ্রমণের এই নতুন ধারা বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের জন্যেও একটা সুযোগ তৈরি করেছে। সরকার এবং বেসরকারি উদ্যোক্তারা যদি এই পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নতুন নতুন আকর্ষণ তৈরি করতে পারে, তাহলে বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করা সম্ভব হবে।
একইসঙ্গে, স্থানীয় পর্যটকদের জন্যেও ভ্রমণের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করা যেতে পারে।
ভবিষ্যতে ভ্রমণের ধারণা আরও অনেক পরিবর্তন আনবে, এমনটাই ধারণা করা হচ্ছে। প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়বে, পরিবেশবান্ধব ভ্রমণের চাহিদা বাড়বে এবং স্থানীয় সংস্কৃতিকে আরও বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে।
তাই, যারা ভ্রমণ ভালোবাসেন, তাদের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে নতুন সব অভিজ্ঞতার জন্য।
তথ্য সূত্র: ট্রাভেল অ্যান্ড লিজার