আফ্রিকার যুবকের মৃত্যু: বিচারের মুখোমুখি প্রাক্তন পুলিশ!

যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান অঙ্গরাজ্যে ২০১৬ বছর বয়সী এক কৃষ্ণাঙ্গ যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় প্রাক্তন পুলিশ অফিসারের বিচার শুরু হয়েছে। খবরটি সারা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে, যা মানবাধিকার এবং পুলিশের ক্ষমতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।

গ্রান্ড র‍্যাপিডস শহরে এই বিচারের শুনানি চলছে, যেখানে প্রাক্তন পুলিশ অফিসার ক্রিস্টোফার শুরকে দ্বিতীয়-ডিগ্রি হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির নাম প্যাট্রিক লয়ো, যিনি কঙ্গো থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় নিয়েছিলেন।

২০২২ সালের এপ্রিল মাসের এক সকালে, ট্র্যাফিকের নিয়ম ভঙ্গের অভিযোগে লয়োকে থামিয়েছিলেন শুর। ঘটনার বিবরণ অনুযায়ী, লাইসেন্স দেখতে চাওয়ার পরে লয়ো দৌড় দেন। এরপর শুর তাকে ধরে ফেলেন এবং তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়।

পুলিশের বডি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, লয়ো অফিসারের টেজার (বৈদ্যুতিক অস্ত্র) ধরার চেষ্টা করছেন। এরপর, অফিসার শুর তার বন্দুক বের করে লয়োর মাথায় গুলি করেন।

এই ঘটনার পরে লয়োর পরিবার জানায়, তিনি কঙ্গোতে চলমান সহিংসতার কারণে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন, যেখানে তিনি দুটি সন্তানের দেখাশোনা করতেন। লয়োর মৃত্যু, যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের হাতে কৃষ্ণাঙ্গ অভিবাসীদের নিহত হওয়ার ধারাবাহিক ঘটনারই একটি অংশ।

এর আগে বোথাম জীন, আমাদু ডায়ালো এবং আবনার লুয়িমার মতো আরও অনেক ঘটনায় পুলিশের জাতিগত বৈষম্য এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে।

এই মামলার শুনানিতে টেজার-এর ব্যবহার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হতে পারে। আইনজীবীরা বলছেন, লয়ো অফিসারের টেজার ছিনিয়ে নিতে চেয়েছিলেন, তাই আত্মরক্ষার্থে গুলি চালানো হয়।

তবে, প্রসিকিউটরদের যুক্তি হলো, প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের কোনো প্রয়োজন ছিল না।

এই মামলার রায় শুধু একজন ব্যক্তির বিচার নয়, এটি যুক্তরাষ্ট্রের বিচার ব্যবস্থা এবং পুলিশের কার্যকারিতা নিয়েও প্রশ্ন তোলে। লয়োর মৃত্যু মিশিগান সহ সারা দেশে ব্যাপক প্রতিবাদের জন্ম দিয়েছিল, যা পুলিশি সংস্কারের দাবিকে আরও জোরালো করে।

এই বিচারের ফলাফল ভবিষ্যতে পুলিশের ক্ষমতা এবং জবাবদিহিতা নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *