কর্মব্যস্ত জীবনে শরীরচর্চা: সময় বের করার কৌশল
আজকের যুগে ব্যস্ততা যেন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। চাকরি, পরিবার, সামাজিক দায়বদ্ধতা – সব সামলাতে গিয়ে শরীরচর্চার জন্য সময় বের করা কঠিন হয়ে পড়ে।
ঘণ্টার পর ঘণ্টা জিমে কাটানো অনেকের পক্ষেই সম্ভব হয় না। তবে সুস্থ থাকতে হলে নিয়মিত শরীরচর্চা জরুরি। তাই বলে কি উপায় নেই? অবশ্যই আছে! প্রয়োজন শুধু একটু সচেতনতা আর কৌশলের।
নিউ ইয়র্কের একজন লাইফস্টাইল ও সুস্থ জীবনযাপনের পরামর্শদাতা চার্লস স্কট-এর মতে, শরীরচর্চা মানেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা জিমে কাটানো নয়। বরং দিনের বিভিন্ন সময়ে ছোট ছোট পদক্ষেপের মাধ্যমেও শরীরকে সচল রাখা যায়।
তার পরামর্শ হল, কর্মজীবনের সঙ্গে শরীরচর্চাকে মিশিয়ে নেওয়া।
উদাহরণস্বরূপ, অফিসের মিটিংগুলো বসে না করে হেঁটে করা যেতে পারে। ফোনে কথা বলার সময় চেয়ারে বসে না থেকে একটু পায়চারী করা যেতে পারে।
মিটিংয়ে বসার পরিবর্তে দাঁড়িয়ে আলোচনা করা যেতে পারে। এতে একদিকে যেমন সময় বাঁচে, তেমনি শরীরচর্চাও হয়।
স্কট আরও বলেন, অফিসে কাজ করার ফাঁকে ১৫-২০ সেকেন্ডের জন্য কিছু ব্যায়াম করা যেতে পারে।
যেমন, পেটের পেশি শক্ত করে কিছুক্ষণ ধরে রাখা, কিংবা কয়েকটা স্কোয়াট করা। এতে কর্মক্ষেত্রে একঘেয়েমি কাটে, শরীর সচল থাকে, এবং ক্যালোরি পোড়ানোও সম্ভব হয়।
এই বিষয়ে স্কটের ক্লায়েন্ট, ভারমন্ট ক্রিমারির জেনারেল ম্যানেজার হ্যারিসন (হ্যারি) কান-এর উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে।
তিনি কাজের আগে প্রতিদিন সকালে উঠে দৌড়ানো, বাইক চালানো অথবা শীতকালে স্কি করেন। কান মনে করেন, কর্মজীবনের চাপ সামলে সুস্থ থাকতে হলে সময়ের সঠিক ব্যবহার করতে হবে।
আসুন, এবার কিছু সহজ কৌশল দেখে নেওয়া যাক, যা ব্যস্ত জীবনে শরীরচর্চার অভ্যাস তৈরি করতে সাহায্য করবে:
- কাজের ফাঁকে বিরতি: ইমেইল বা অন্যান্য কাজের মাঝে ১৫-২০ মিনিটের জন্য ছোটখাটো কিছু ব্যায়াম করুন। যেমন – বুকডন, স্কোয়াট অথবা হালকা স্ট্রেচিং।
- হাঁটাচলার অভ্যাস: লিফটের বদলে সিঁড়ি ব্যবহার করুন। কাছাকাছি কোথাও যেতে হলে গাড়ি বা বাইকের পরিবর্তে হেঁটে যান।
- ভ্রমণের সময়: বিমানের ফ্লাইট অথবা ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করার সময় বিমানবন্দরের আশেপাশে বা স্টেশনে কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করুন।
- বন্ধুদের সঙ্গে শরীরচর্চা: বন্ধুদের সঙ্গে মিলে কোনো খেলাধুলা অথবা শরীরচর্চা শুরু করতে পারেন। এতে নিয়মিত শরীরচর্চা করার উৎসাহ বজায় থাকবে।
- লক্ষ্য নির্ধারণ: নিজের জন্য একটি ‘ফিটনেস’ লক্ষ্য তৈরি করুন এবং সেই অনুযায়ী রুটিন তৈরি করুন।
শরীরের প্রতি যত্ন নেওয়াটা জরুরি। স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করুন এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন।
মনে রাখতে হবে, সুস্থ থাকতে হলে শরীরের সচলতা বজায় রাখা খুব জরুরি। ছোট ছোট পদক্ষেপগুলোই পারে আপনাকে কর্মব্যস্ত জীবনেও সুস্থ রাখতে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস