আতঙ্কের ছবি! আকাশপথে সংঘর্ষের ঝুঁকিতে লাস ভেগাস বিমানবন্দর, পদক্ষেপ নিলো FAA

যুক্তরাষ্ট্রের বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (FAA) লাস ভেগাস বিমানবন্দরে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সম্প্রতি ওয়াশিংটনে আকাশে দুটি বিমানের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনার তদন্তের পর এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, পর্যটকদের জন্য হেলিকপ্টার ও অন্যান্য বিমানের মধ্যে সম্ভাব্য সংঘর্ষের ঝুঁকি কমাতে জরুরি ভিত্তিতে কিছু নিয়ম পরিবর্তন করা হয়েছে।

ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (FAA) জানিয়েছে, হ্যারি রিড আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে হেলিকপ্টার এবং অন্যান্য বিমানের মধ্যে সংঘর্ষের আশঙ্কা ছিল। এই কারণে কর্তৃপক্ষ দ্রুত কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করে।

এর ফলস্বরূপ, বিমানের মধ্যে সংঘর্ষের সতর্কতা ৩০ শতাংশ কমে গেছে। FAA-এর ভারপ্রাপ্ত প্রশাসক ক্রিস রশলেউ বলেন, “আমরা দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছি, যার মধ্যে হেলিকপ্টারগুলোর ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা এবং পাইলটদের জন্য অতিরিক্ত সতর্কতা জারি করা হয়েছে।”

গত জানুয়ারিতে ওয়াশিংটনের কাছে একটি যাত্রীবাহী বিমান ও সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারের মধ্যে সংঘর্ষ হয়, যাতে ৬৭ জন নিহত হয়েছিল। এই ঘটনার পর FAA দেশের অন্যান্য ব্যস্ত বিমানবন্দরগুলোতে হেলিকপ্টার ট্র্যাফিকের নিরাপত্তা পর্যালোচনা শুরু করে।

বোস্টন, নিউ ইয়র্ক, বাল্টিমোর-ওয়াশিংটন, ডেট্রয়েট, শিকাগো, ডালাস, হিউস্টন, লস অ্যাঞ্জেলেস এবং উপসাগরীয় উপকূলের বিমানবন্দরগুলোও এই তালিকার অন্তর্ভুক্ত।

পর্যালোচনায় দেখা গেছে, লাস ভেগাসে হেলিকপ্টার পরিচালকদের সঙ্গে চুক্তিতে উল্লম্ব ও অনুভূমিক দূরত্ব বজায় রাখার বিষয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা ছিল না। বিমানবন্দরের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলাররাও হেলিকপ্টার এবং বিমানের মধ্যে সতর্কতামূলক বার্তা পাঠাচ্ছিল না।

FAA জানিয়েছে, তারা ভবিষ্যতে লাস ভেগাস এবং অন্যান্য বিমানবন্দরেও নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করবে, যেখানে নিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগের প্রমাণ পাওয়া যাবে।

বিমান দুর্ঘটনার তদন্তের প্রাক্তন বিশেষজ্ঞ জেফ গাজ্জেত্তি বলেন, “আগেও সেখানে যে নিরাপত্তা ঝুঁকি ছিল, তা দ্রুত সতর্কবার্তা কমার মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে।” তিনি আরও যোগ করেন, “সমস্যাটি কতটা গুরুতর ছিল, তা বলা কঠিন। তবে এটি দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে এমন একটি দুর্বলতা ছিল, যেমনটা ওয়াশিংটন ডিসিতে ঘটেছিল।”

FAA-এর এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন অ্যাভিয়েশন আইনজীবী রবার্ট ক্লিফোর্ড। তিনি বলেন, “FAA-এর এই পদক্ষেপ ভ্রমণকারীদের নিরাপত্তা দেবে। হেলিকপ্টারগুলো প্রায়ই দুর্ঘটনার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ থাকে।

FAA-এর অতিরিক্ত সতর্কতা অনেক জীবন বাঁচাতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রে বিমানযাত্রা তুলনামূলকভাবে নিরাপদ হলেও, কর্তৃপক্ষের আরও বেশি সতর্ক হওয়া উচিত। এই ঘটনাগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে বাংলাদেশের বিমানবন্দরগুলোতেও নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা প্রয়োজন।

বিমানযাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আরও সক্রিয় হওয়া উচিত।

তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *