মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (FAA) দেশটির ৪০টি ব্যস্ততম বিমানবন্দরে বিমান চলাচল ১০ শতাংশ কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শুক্রবার সকাল থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।
সরকারি অচলাবস্থার কারণে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলারদের ওপর চাপ সৃষ্টি হওয়ায় নিরাপত্তা ঝুঁকির আশঙ্কায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, বর্তমানে কর্মীদের বেতন দিতে না পারায় তারা মানসিক চাপে রয়েছেন। এর ফলে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন এবং অনেকে অতিরিক্ত কাজ করতেও রাজি হচ্ছেন না।
এর ফলস্বরূপ বিমানবন্দরে ফ্লাইট পরিচালনায় কর্মী সংকট দেখা দিয়েছে। ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের প্রশাসক ব্রায়ান বেডফোর্ড জানিয়েছেন, বিমানযাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তারা এই ব্যবস্থা নিচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এই বিধিনিষেধ বহাল থাকবে।
এই সিদ্ধান্তের ফলে প্রতিদিন পরিচালিত হওয়া ৪৪,০০০ এর বেশি ফ্লাইটের ওপর প্রভাব পড়তে পারে। এর মধ্যে বাণিজ্যিক যাত্রী বিমান, কার্গো বিমান এবং ব্যক্তিগত বিমান চলাচলও অন্তর্ভুক্ত।
তবে, কোন কোন বিমানবন্দরে এই বিধিনিষেধ কার্যকর করা হবে, তা তাৎক্ষণিকভাবে জানায়নি এফএএ। খুব সম্ভবত বৃহস্পতিবারের মধ্যে এই তালিকা প্রকাশ করা হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের পরিবহন সচিব শান ডাফি বলেছেন, কর্মীদের ওপর চাপ কমাতে এবং বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা অক্ষুণ্ণ রাখতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তিনি আরও জানান, সরকারের পক্ষ থেকে আলোচনার মাধ্যমে অচলাবস্থা নিরসনের চেষ্টা চলছে।
এদিকে, ইউনাইটেড, সাউথওয়েস্ট এবং আমেরিকান এয়ারলাইন্স জানিয়েছে, তারা তাদের ফ্লাইট সূচি পুনর্বিন্যাস করে যাত্রীদের ভোগান্তি কমানোর চেষ্টা করবে। ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্কট কারবি কর্মীদের উদ্দেশ্যে এক চিঠিতে বলেছেন, তারা আঞ্চলিক রুটে এবং হাব-টু-হাব ফ্লাইটগুলোতে এই কাটছাঁট করবেন।
এই সময়ে যারা তাদের টিকিট বাতিল করতে চাইবেন, তাদের রিফান্ড করারও ব্যবস্থা করা হবে।
এয়ারলাইন শিল্পের বিশ্লেষক হেনরি হারতেভেল্ট মনে করেন, ফেডারেল সরকারের এই পদক্ষেপের কারণে বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে পারে। কারণ, এয়ারলাইন্সগুলোকে সময় না দিয়ে হঠাৎ করে ফ্লাইট কমানোর কথা বলা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিমানবন্দরে ভ্রমণের সময় যাত্রীদের অতিরিক্ত সময় হাতে নিয়ে যাওয়া উচিত এবং ফ্লাইটের আপডেটের জন্য এয়ারলাইন্সের অ্যাপ ও বিমানবন্দরের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে নজর রাখতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই অচলাবস্থার কারণে বিমানবন্দরের কর্মীদের মধ্যে কাজ করার মানসিকতা কমে যাচ্ছে। এই সংকট চলতে থাকলে বিমান চলাচলে আরও বড় ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস