যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে উড়োজাহাজ চলাচল নিয়ন্ত্রণকারী ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ)-এর কর্মীদের বেতন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চরম আর্থিক দুর্দশার চিত্র ফুটে উঠেছে। সরকারি অচলাবস্থার কারণে তারা মাসের পর মাস বেতন পাচ্ছেন না, ফলে তাদের জীবনযাত্রায় নেমে এসেছে গভীর সঙ্কট। খবর সিএনএন।
**বেতন বন্ধ, অনিশ্চয়তার জীবন**
ওয়াশিংটন ডিসি-তে কর্মরত রাডার টেকনিশিয়ান ক্লিভারসন স্কিমিডট জানিয়েছেন, বেতন না পাওয়াটা খুবই হতাশাজনক। তিনি বলেন, “আমি নিজেকে শান্ত রাখার চেষ্টা করছি, আর প্রার্থনা করছি যেন হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোক না হয়।”
বিমানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা এই কর্মীদের বেতন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাদের পরিবারে নেমে এসেছে চরম দুর্গতি। স্কিমিডটের স্ত্রী খণ্ডকালীন কাজ করেন এবং তাদের একটি ছোট ছেলে রয়েছে।
ছেলের আবদার মেটাতে না পারায় তিনি মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছেন।
বোস্টন টিআরএসিওন-এর একজন কন্ট্রোলারের স্ত্রী, যিনি নিজের স্বামীর পরিচয় গোপন রাখতে চেয়েছেন, জানিয়েছেন, তার স্বামী প্রায়ই একটানা কাজ করেন।
এই পরিস্থিতিতে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটানো তার জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে। একদিকে কাজের চাপ, অন্যদিকে বেতনহীন জীবন—এসবের কারণে তাদের মধ্যে বাড়ছে হতাশা।
**পরিবারের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তা**
এই পরিস্থিতিতে অনেক কর্মী অসুস্থ হয়ে পড়ছেন, যার ফলে কর্মীদের ঘাটতি দেখা দিয়েছে এবং উড়োজাহাজ চলাচলে বিলম্ব হচ্ছে।
কর্মীদের পরিবারগুলো তাদের প্রয়োজনীয় খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে। বাড়ির মেরামত এবং অন্যান্য জরুরি কাজগুলোও তারা এখন বন্ধ রাখতে বাধ্য হচ্ছেন।
তারা বিদ্যুতের ব্যবহার কমিয়ে দিয়েছেন এবং শীতকালে গরম থাকার জন্য কাঠের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন।
পরিবারের সদস্যরা তাদের সন্তানদের খেলাধুলা এবং অন্যান্য খরচ কমিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি, সন্তানদের ডাক্তার দেখানোর মতো প্রয়োজনীয়তাও তারা আপাতত স্থগিত রেখেছেন।
**আগেও দেখা গেছে এমন পরিস্থিতি**
এর আগে ২০১৯ সালের জানুয়ারিতেও এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। সে সময় কয়েকজন এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার অসুস্থ হয়ে পড়ায় নিউইয়র্কের লাগোয়ার্ডিয়া বিমানবন্দরে উড়োজাজ চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং অন্যান্য বিমানবন্দরেও ফ্লাইট বিলম্বিত হয়।
পরিস্থিতি সামাল দিতে সে সময় সরকারের পক্ষ থেকে জরুরি পদক্ষেপ নিতে হয়েছিল।
বর্তমানেও কর্মীদের এই বেতনহীন অবস্থায় দিন কাটাতে হচ্ছে।
এফএএ-এর কর্মী এবং তাদের পরিবারগুলো এই কঠিন সময়েও দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছেন।
তাদের একটাই চাওয়া, এই অচলাবস্থা দ্রুত দূর হোক এবং তারা তাদের প্রাপ্য বেতন ফিরে পান।
তথ্য সূত্র: সিএনএন