ফেসবুকের ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে, সম্প্রতি একটি গুরুত্বপূর্ণ খবর এসেছে। সামাজিক মাধ্যম সংস্থা মেটা’র বিরুদ্ধে ব্যবহারকারীদের ডেটা নিয়ে একটি মামলার নিষ্পত্তির ফলস্বরূপ, ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৭২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এই বিশাল অঙ্কের অর্থ মূলত সেইসব মার্কিন ফেসবুক ব্যবহারকারীদের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে, যাদের তথ্য কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা নামক একটি সংস্থার মাধ্যমে বেহাত হয়েছিল।
২০১৮ সালে জানা যায়, প্রায় ৮ কোটি ৭০ লক্ষ ফেসবুক ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়েছে। এরপরেই ব্যবহারকারীদের গোপনীয়তা রক্ষার বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় আসে।
এই ঘটনার জেরে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবহারকারীরা ক্ষতিপূরণের জন্য আবেদন করেন।
এই মামলায়, মেটা (ফেসবুকের মূল সংস্থা) সরাসরি কোনো ভুল স্বীকার করেনি। তবে ব্যবহারকারীদের ডেটা সুরক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করতে তারা কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে।
এর মধ্যে অন্যতম হলো, তৃতীয় পক্ষের ডেটা ব্যবহারের উপর নিয়ন্ত্রণ বৃদ্ধি করা এবং ব্যবহারকারীদের ডেটা ব্যবহারের বিষয়ে আরও বিস্তারিত তথ্য জানানো।
যুক্তরাষ্ট্রের ফেসবুক ব্যবহারকারীদের জন্য এই ক্ষতিপূরণ প্রদানের প্রক্রিয়াটি ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে। এই অর্থ প্রদানের জন্য যোগ্য হিসেবে বিবেচিত হতে, ব্যবহারকারীকে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে (মে, ২০০৭ থেকে ডিসেম্বর, ২০২২ পর্যন্ত) ফেসবুকের সক্রিয় সদস্য হতে হয়েছে।
এছাড়া, ২০২৩ সালের আগস্ট মাসের মধ্যে ক্ষতিপূরণের জন্য আবেদন করতে হয়েছিল।
যদি কোনো ব্যবহারকারী ক্ষতিপূরণের জন্য আবেদন করে থাকেন, তবে তাদের কত টাকা পাওয়া যাবে তা নির্ভর করবে তারা কত দিন ধরে ফেসবুক ব্যবহার করেছেন তার ওপর।
সেই অনুযায়ী, প্রত্যেক ব্যবহারকারীকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রদান করা হবে। সাধারণত, এই অর্থ সরাসরি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে, অথবা পেপ্যাল, ভার্চুয়াল প্রি-পেইড মাস্টারকার্ড, ভেনমো বা জেলের মাধ্যমে পাঠানো হবে।
এই ঘটনার মূল তাৎপর্য হলো, ডিজিটাল যুগে আমাদের ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা আবারও একবার প্রমাণিত হয়েছে।
বিশ্বজুড়ে ডেটা সুরক্ষা এবং ব্যবহারকারীর অধিকার রক্ষার বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। বাংলাদেশেও বর্তমানে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ছে, তাই আমাদের ডেটা সুরক্ষার বিষয়ে আরও বেশি সতর্ক হতে হবে।
ব্যবহারকারীদের উচিত, তাদের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষিত রাখতে এবং সামাজিক মাধ্যমে তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন