ইউরোপীয় ইউনিয়নের তিনজন শীর্ষ নেতার একটি ছবিকে কেন্দ্র করে মাদক ব্যবহারের গুজব ছড়ানো হয়, যা পরে ভিত্তিহীন প্রমাণিত হয়েছে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, জার্মানির চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মার্চ এবং যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের একটি বৈঠকের ছবিকে কেন্দ্র করে এই গুজব ছড়ানো হয়।
ছবিতে তাদের টেবিলে একটি সাদা বস্তু দেখা যায়, যা নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়।
ঘটনার সূত্রপাত হয়, যখন কন্সপিরেসি তাত্ত্বিক অ্যালেক্স জোন্স দাবি করেন যে, ছবিতে দেখা যাওয়া সাদা পাউডার আসলে কোকেন ছিল এবং নেতারা তা লুকানোর চেষ্টা করছিলেন। তিনি আরও যোগ করেন যে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এই নেতাদের সঙ্গে দেখা করার পরেই এই ঘটনা ঘটেছে।
তবে, দ্রুতই এই দাবিগুলি মিথ্যা প্রমাণিত হয়।
আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এএফপি এবং অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) তোলা ছবি এবং ভিডিও পরীক্ষা করে দেখা যায়, টেবিলে থাকা সাদা বস্তু আসলে একটি টিস্যু ছিল। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের কার্যালয়, এলিসি প্যালেসের পক্ষ থেকেও এই বিষয়ে বিবৃতি দেওয়া হয় এবং এটিকে ‘মিথ্যা খবর’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
জার্মান সরকারও জোন্সের এই অভিযোগকে ‘অযৌক্তিক’ বলে খারিজ করে দেয়।
এই ঘটনার সঙ্গে রাশিয়ার যোগসূত্র খুঁজে পাওয়া যায়। রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা, এই ছবিগুলি শেয়ার করে, নেতাদের ‘সরঞ্জাম’ লুকানোর কথা উল্লেখ করেন।
তিনি জেলেনস্কিকে মাদকাসক্ত বলেও অভিহিত করেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রুশ কর্তৃপক্ষ প্রায়শই পশ্চিমা নেতাদের বিরুদ্ধে মাদক ব্যবহারের মিথ্যা অভিযোগ তোলে, যা তাদের সম্মানহানি করার একটি কৌশল।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই ধরনের গুজব ছড়ানোর মূল উদ্দেশ্য হলো, পশ্চিমা দেশগুলোর নেতাদের ভাবমূর্তি নষ্ট করা এবং তাদের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে দুর্বল করা। এই ঘটনার মাধ্যমে আবারও প্রমাণিত হয় যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা তথ্যের বিস্তার অত্যন্ত দ্রুত হতে পারে।
তাই, যে কোনো খবর প্রচারের আগে তা যাচাই করা অত্যন্ত জরুরি।
তথ্য সূত্র: