আজ রাতে পৃথিবীর বুকে আছড়ে পড়তে পারে সোভিয়েত যুগের মহাকাশযান!

মহাকাশ থেকে পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে একটি অচল সোভিয়েত মহাকাশযান। ১৯৭২ সালে শুক্রগ্রহে অবতরণের উদ্দেশ্যে উৎক্ষেপণ করা হলেও, কসমস-৪৮২ নামের এই যানটি নির্ধারিত কক্ষপথে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়।

এরপর থেকে এটি পৃথিবীর কক্ষপথে ঘুরতে ঘুরতে অবশেষে ভূপৃষ্ঠে ফিরে আসার পথে রয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের পূর্বাভাস অনুযায়ী, শুক্রবার রাতের কোনো এক সময়ে অথবা শনিবার ভোরের দিকে এটি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করবে। যানটির সম্ভাব্য অবতরণ স্থান হিসেবে আফ্রিকা, দক্ষিণ আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ইউরোপ এবং এশিয়ার কিছু অংশকে চিহ্নিত করা হয়েছে।

তবে এর মধ্যে দক্ষিণ এশিয়া, বিশেষ করে বাংলাদেশের আকাশে এর ধ্বংসাবশেষ পড়ার সম্ভাবনা এখনো পর্যন্ত কম।

কসমস-৪৮২ ছিলো সোভিয়েত ইউনিয়নের ভেনেরা প্রোগ্রামের অংশ। ১৯৭০ ও ১৯৮০ এর দশকে শুক্রগ্রহের পরিবেশ ও গঠন সম্পর্কে জানতে এই প্রোগ্রামটি বেশ কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করে।

এই অভিযানের অংশ হিসেবেই কসমস-৪৮২ তৈরি করা হয়েছিল। এটির মূল উদ্দেশ্য ছিল শুক্রগ্রহের পৃষ্ঠে অবতরণ করা। কিন্তু উৎক্ষেপণের পর এটি পৃথিবীর কক্ষপথেই আটকা পরে যায়।

প্রায় ১ মিটার (৩ ফুট) ব্যাসের এই যানটি সম্ভবত অক্ষত অবস্থায় পৃথিবীতে ফিরে আসবে। এর কারণ হলো, শুক্রগ্রহের তীব্র তাপমাত্রা ও চাপ সহ্য করার উপযোগী করে এটি তৈরি করা হয়েছিল।

মহাকাশযানটিতে থাকা বিশেষ তাপ প্রতিরোধক আবরণ (heat shield) এটিকে বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের সময় পুড়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করবে।

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, কসমস-৪৮২ পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের পর এর ধ্বংসাবশেষ যেখানেই পড়ুক না কেন, সেটির কাছাকাছি যাওয়া উচিত হবে না। কারণ, এতে ব্যবহৃত জ্বালানি বা অন্যান্য উপকরণ থেকে ক্ষতির সম্ভাবনা থাকতে পারে।

কেউ যদি এর কোনো অংশ খুঁজে পান, তাহলে দ্রুত স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।

আন্তর্জাতিক মহাকাশ আইন অনুযায়ী, এই মহাকাশযানের মালিকানা রাশিয়ার। মহাকাশে পাঠানো কোনো বস্তুর ক্ষেত্রে, সেটি যদি পৃথিবীর বুকে ফিরে আসে, তাহলে যে দেশ সেটি পাঠিয়েছে, সেই দেশেরই তার ওপর অধিকার থাকে।

বর্তমানে মহাকাশে বিভিন্ন দেশের পাঠানো স্যাটেলাইটের সংখ্যা বাড়ছে, যা ভবিষ্যতে মহাকাশ-দূষণ(space debris) এর পরিমাণ আরও বাড়িয়ে তুলবে।

তাই, মহাকাশের এই বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার জরুরি।

তথ্য সূত্র: আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *