পুরুষদের দৌড়ের জগতে চার মিনিটের মাইল ভাঙা এক বিশাল কীর্তি ছিল, যা ১৯৫৪ সালে রজার ব্যানিস্টার প্রথম করেন। এবার সেই মাইলফলক ছুঁতে চলেছেন কেনিয়ার নারী দৌড়বিদ ফেইথ কিপিয়েগন।
আগামী ২৬শে জুন প্যারিসের স্তাদ সেবাস্তিয়ান শার্লেটিতে তিনি এই ঐতিহাসিক মাইলফলক ভাঙার চেষ্টা করবেন। বর্তমানে মহিলাদের মধ্যে দ্রুততম দৌড়বিদ হিসেবে পরিচিত কিপিয়েগন।
তার বর্তমান রেকর্ড ৪ মিনিট ৭.৬৪ সেকেন্ড।
ফেইথ কিপিয়েগনের বয়স এখন ৩১ বছর। তিনি শুধু একজন দৌড়বিদ নন, বরং ক্রীড়া জগতের উজ্জ্বল নক্ষত্র।
১৫০০ মিটার দৌড়ে তিনি পরপর তিনটি অলিম্পিক সোনা জিতেছেন। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে চারবার সোনাজয়ী এই অ্যাথলিট দৌড়ানোর সময়ে শরীরের সামান্যতম ক্লান্তিও প্রকাশ করেন না।
তার শরীরের সাবলীলতা মুগ্ধ করার মতো।
এই দৌড়ের জন্য কিপিয়েগন প্রস্তুত হচ্ছেন কেনিয়ার একটি প্রশিক্ষণ শিবিরে। এখানকার পরিবেশ অনেকটা সন্ন্যাসীদের আশ্রমের মতো।
চারপাশে সবুজের সমারোহ, যা একজন দৌড়বিদের মনোযোগ ধরে রাখতে সহায়ক। কিপিয়েগনের বাড়ি কেনিয়ার একটি ছোট গ্রামে, যেখানে তার শৈশব কেটেছে।
ছোটবেলায় অন্যান্য ভাই-বোনের মতো তিনিও ১০ মাইল পথ দৌড়ে স্কুলে যেতেন। ১৪ বছর বয়সে দৌড়ের প্রতি তার আগ্রহ জন্মায় এবং অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি একজন সফল দৌড়বিদ হয়ে ওঠেন।
এই ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হওয়ার জন্য মুখিয়ে আছে ক্রীড়া বিশ্ব। কিপিয়েগন যদি সফল হন, তবে এটি শুধু একটি রেকর্ড হবে না, বরং বিশ্বজুড়ে মেয়েদের জন্য এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নারীদের ক্ষেত্রে পুরুষদের তুলনায় প্রায় ১০ শতাংশ কম সময় লাগে। সেই হিসেবে, কিপিয়েগনের পক্ষে চার মিনিটের নিচে দৌড়ানো কঠিন হলেও অসম্ভব নয়।
তবে, সাফল্যের জন্য প্রয়োজন শারীরিক সক্ষমতা এবং মানসিক দৃঢ়তা। কিপিয়েগনের প্রশিক্ষক প্যাট্রিক সাঙ মনে করেন, তার ছাত্রীর মানসিক শক্তি এতটাই প্রবল যে তাকে বিশেষভাবে প্রস্তুত করার প্রয়োজন নেই।
কিপিয়েগনের এই প্রচেষ্টা শুধু একটি দৌড় নয়, বরং এটি একটি স্বপ্ন, যা অনেক নারীকে তাদের স্বপ্ন পূরণের জন্য উৎসাহিত করবে।
কিপিয়েগন নিজেও বলেন, তিনি চান তার এই কীর্তি অন্যদের জন্য অনুপ্রেরণা হোক।
তথ্য সূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক