বিদেশী সরকারগুলির হাতে বন্দী হওয়া আমেরিকান নাগরিকদের পরিবারের সদস্যরা তাঁদের স্বজনদের মুক্তির জন্য আকুল আবেদন জানাচ্ছেন। তাঁদের একটাই আর্তি, তাঁদের প্রিয়জনদের যেন ভুলে যাওয়া না হয়। এই দুঃসহ পরিস্থিতিতে বন্দী স্বজনদের মুক্তির জন্য তাঁরা মার্কিন সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
সম্প্রতি, রাশিয়ার কারাগারে প্রায় সাড়ে তিন বছর বন্দী থাকার পর মুক্তি পাওয়া মার্ক ফোগেল ওয়াশিংটন ডিসিতে এক অনুষ্ঠানে যোগ দেন। সেখানে তিনি এখনো বন্দী থাকা অন্যান্য আমেরিকানদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমর্থন জানান। ফোগেল বলেন, “রাশিয়ার কারাগারে বন্দী থাকা অবস্থায় সবচেয়ে কঠিন বিষয় ছিল, এই অনুভব করা যে, হয়তো আমি বিস্মৃত হয়ে যাচ্ছি।”
ফোগেলের মতো, বিভিন্ন দেশ থেকে মুক্তি পাওয়া কয়েকজন আমেরিকান নাগরিক ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। ‘ব্রিং আওয়ার ফ্যামিলিজ হোম ক্যাম্পেইন’-এর উদ্যোগে, ওয়াশিংটন ডিসির একটি দেয়ালে আটক আমেরিকানদের বিশাল আকৃতির ছবি দিয়ে একটি ম্যুরাল তৈরি করা হয়েছে। শিল্পী আইজ্যাক ক্যাম্পবেল এই ম্যুরালটি তৈরি করেছেন। ভেনেজুয়েলার কারাগারে বন্দী থাকা জোসেফ সেন্ট ক্লেয়ারের বাবা স্কট সেন্ট ক্লেয়ার জানান, এই ম্যুরাল তাঁদের স্বজনদের একটি পরিচিতি দেয়। ছবিগুলো বড় আকারে হওয়ায়, তাঁদের আর উপেক্ষা করা যাবে না।
এই ম্যুরালে সেন্ট ক্লেয়ার ছাড়াও আরও কয়েকজন বন্দী আমেরিকান নাগরিকের মুখ আঁকা হয়েছে, যেমন: ক্সেনিয়া কারেলিনা, মাহমুদ হাবিবী, লুকাস হান্টার, আন্দ্রে খাচাতুরিয়ান, ডেভিড বার্নস, জর্জে মার্সেলো ভার্গাস, রবার্ট গিলমান, উইলবার্ট কাসতানেদা, ইউরাস জিয়ানকোভিচ, শাহাব দালি এবং জ্যাক শাহিন। জানা গেছে, কারেলিনা এবং জিয়ানকোভিচ দুজনেই মুক্তি পেয়েছেন।
আটককৃত এই আমেরিকান নাগরিকদের পরিবারগুলো তাঁদের স্বজনদের বন্দীদশার বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন। তাঁদের মধ্যে ভার্গাসের নাতনি বলেন, “কল্পনা করুন, আপনি আপনার ভালোবাসার মানুষটিকে একটি আবদ্ধ ঘরে বন্দী করে রেখেছেন, যেখানে কোনো আলো নেই, জানালা নেই। তিনি সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন, অসহনীয় কষ্টে আছেন এবং জানেন না কবে মুক্তি পাবেন। আমাদের জন্য, এই দুঃস্বপ্নটাই এখন প্রতিদিনের বাস্তবতা।”
তাঁরা মার্কিন সরকারের প্রতি তাঁদের স্বজনদের ফিরিয়ে আনতে সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান। প্যাটি সেন্ট ক্লেয়ার বলেন, “অনুগ্রহ করে, প্রেসিডেন্ট এবং কংগ্রেসের সদস্যরা, আপনাদের ক্ষমতা ব্যবহার করুন, আপনাদের কণ্ঠস্বরকে কাজে লাগান। বিশ্বকে জানান, আমেরিকা তার নাগরিকদের পরিত্যাগ করে না।”
তথ্য সূত্র: সিএনএন।