যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান অঙ্গরাজ্যে ইসলামিক স্টেট (আইএস) সংশ্লিষ্ট একটি সম্ভাব্য সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনা ভেস্তে দেওয়ার অভিযোগে দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই)। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, মোহাম্মদ আলী এবং মাজেদ মাহমুদ।
তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের উদ্দেশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ হস্তান্তরের অভিযোগ আনা হয়েছে।
এফবিআইয়ের তদন্তে জানা যায়, এই হামলার পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত ছিল অপর একজন, যিনি একজন কিশোর এবং তাকে ‘ব্যক্তি ১’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তদন্তকারীরা তাদের গতিবিধি নজরে রাখার জন্য গোপন সূত্র ব্যবহার করে এবং ফোন কল রেকর্ড করে। তাদের পরিকল্পনা ছিল ২০১৫ সালে প্যারিসে সংঘটিত সন্ত্রাসী হামলার অনুরূপ একটি ঘটনা ঘটানো।
তদন্ত সূত্রে জানা যায়, এফবিআইয়ের গোয়েন্দারা প্রথমে সন্দেহভাজন এক ব্যক্তির ওপর নজরদারি শুরু করে, যিনি যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে এবং বাইরেও ভ্রমণ করতেন। পরবর্তীতে, গোয়েন্দারা জানতে পারেন, অভিযুক্ত ব্যক্তি মিশিগানের ডিয়ারবর্নে বসবাস করেন।
এরপর তারা মোহাম্মদ আলীর বাড়িতে যান এবং সেখানে দুই রাত অবস্থান করেন।
অভিযোগ অনুযায়ী, ওই ব্যক্তি জুন মাসে সিরিয়া যাওয়ার জন্য অন্যদের সঙ্গে একটি গোপন বৈঠকে মিলিত হন, যেখানে আইএস-এ যোগদানের বিষয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে উপস্থিত এক ব্যক্তি প্যারিসে ২০১৫ সালের সন্ত্রাসী হামলার কথা উল্লেখ করেন এবং সেটি অনুসরণ করার ইঙ্গিত দেন।
এফবিআইয়ের ধারণা, অভিযুক্তরা সম্ভবত হ্যালোইন উৎসবকে হামলার জন্য বেছে নিয়েছিল।
এফবিআইয়ের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলী একটি শটগান এবং একটি রাইফেল কিনেছিলেন। মাহমুদ কিনেছিলেন দুইটি কার্তুজের বাক্স, যেখানে আটশর বেশি গুলি ছিল। এরপর তারা স্থানীয় শুটিং রেঞ্জে গিয়ে প্রশিক্ষণ নিতে শুরু করে।
গোয়েন্দারা তাদের ওপর নজর রাখছিলেন।
তদন্তকারীরা জানতে পারেন, অভিযুক্তরা মিশিগানের একটি নাইটলাইফের জন্য পরিচিত এলাকায় মিলিত হতেন। তারা প্রায়ই রাতে স্থানীয় পার্কগুলোতেও দেখা করতেন।
অক্টোবরের শেষ দিকে, এফবিআই কর্মকর্তাদের সন্দেহ হয়, হামলার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হচ্ছে। এর পরেই, ৩১ অক্টোবর ভোরে অভিযান চালিয়ে আলী ও মাহমুদকে গ্রেপ্তার করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডি এক বিবৃতিতে জানান, এই গ্রেপ্তারের মাধ্যমে একটি বড় ধরনের আইএস সংশ্লিষ্ট সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনা নস্যাৎ করা হয়েছে।
অভিযুক্তদের দোষী সাব্যস্ত করা হলে, তারা ১৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং প্রায় আড়াই কোটি টাকার (২৫০,০০০ মার্কিন ডলারের সমতুল্য) জরিমানা হতে পারে।
এই মামলার তদন্ত এখনো চলছে এবং ‘ব্যক্তি ১’-এর বিরুদ্ধে এখনো কোনো অভিযোগ আনা হয়নি।
তথ্য সূত্র: সিএনএন