যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ঔষধ প্রশাসন (এফডিএ)-এর ওষুধ বিভাগের প্রধান হিসেবে সম্প্রতি নিয়োগ পেয়েছেন জর্জ টিডমার্শ। তিনি এক সময় ওষুধ প্রস্তুতকারক একটি কোম্পানির প্রধান নির্বাহী ছিলেন। এই নিয়োগের ফলে এফডিএ-এর শীর্ষ পর্যায়ে চলমান পরিবর্তনগুলোর ধারাবাহিকতা বজায় থাকল।
ডা. টিডমার্শ-কে এফডিএ-এর ড্রাগ ইভালুয়েশন অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারের (সিডিইআর) পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এই সেন্টারটি যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে আসা সব ওষুধের নিরাপত্তা ও কার্যকারিতা নিরীক্ষণ করে থাকে।
ডা. টিডমার্শের এই নিয়োগ এমন এক সময়ে এলো যখন সিডিইআর-এর ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ড. জ্যাকুলিন করিগান-কুরে অবসরে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। টিডমার্শ-কে এখন স্বাস্থ্য বিষয়ক বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর দিকে নজর রাখতে হবে।
এর মধ্যে গর্ভপাতের ওষুধ মিফেপ্রিস্টোনের নিরাপত্তা পর্যালোচনা অন্যতম। এছাড়াও, দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহৃত কিছু ওষুধের ব্যবহার নিয়েও এফডিএ-কে নতুন করে কাজ করতে হবে। এই তালিকায় রয়েছে অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট এবং মেনোপজের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হরমোন রিপ্লেসমেন্ট ওষুধও।
ডা. টিডমার্শ ‘হরাইজন ফার্মাসিউটিক্যালস’-এর মতো ওষুধ প্রস্তুতকারক কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান ছিলেন। হরাইজন ফার্মাসিউটিক্যালস মূলত বাতের চিকিৎসায় ব্যবহৃত একটি প্রদাহরোধী ওষুধ তৈরি করে।
তিনি স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সহযোগী অধ্যাপক হিসেবেও কাজ করেছেন।
এফডিএ-এর সবচেয়ে বড় বিভাগ হলো এই সিডিইআর। এখানে প্রায় ৬,০০০ জন কর্মী নতুন ওষুধের নিরাপত্তা ও কার্যকারিতা পর্যালোচনা করেন। এছাড়াও, পুরনো ওষুধগুলোর ব্যবহার ও বিপণনও তারা নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করে থাকেন।
যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য সচিব রবার্ট এফ. কেনেডির তত্ত্বাবধানে ফেডারেল স্বাস্থ্যখাতে ব্যাপক কর্মী ছাঁটাইয়ের অংশ হিসেবে এফডিএ থেকে প্রায় ২,০০০ জন কর্মীকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও, ১,০০০ জনের বেশি কর্মী স্বেচ্ছায় অবসর নিয়েছেন বা আগেভাগে অবসরে গিয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে অনেক কর্মী নতুন চাকরির সুযোগ খুঁজছেন। কর্মী সংকটের কারণে এফডিএ-এর স্বাভাবিক কার্যক্রম, বিশেষ করে নতুন ওষুধ পরীক্ষার কাজটি সময় মতো সম্পন্ন করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
জানুয়ারিতে ড. প্যাট্রিসিয়া কাভাজ্জোনি পদত্যাগ করার পর থেকে সিডিইআর-এর পরিচালকের পদটি খালি ছিল। সাধারণত, এফডিএ-এর বিভাগীয় প্রধানরা বছরের পর বছর, এমনকি কয়েক দশক ধরে একই পদে দায়িত্ব পালন করেন।
মে মাসে এফডিএ কমিশনার মার্টি মাকারি কোভিড-১৯ পরিস্থিতি মোকাবিলায় এফডিএ-এর কার্যক্রমের কড়া সমালোচক ডা. বিনয় প্রসাদকে ভ্যাকসিন সেন্টারের প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেন। একইসঙ্গে, তাকে এফডিএ-এর প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা হিসেবেও দায়িত্ব দেওয়া হয়।
তথ্যসূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস