শরৎকালের কোভিড শটের রেসিপি: বিশেষজ্ঞদের মাঝে উত্তেজনা!

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আসন্ন শীত মৌসুমের জন্য কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের সংস্করণ পরিবর্তনের বিষয়ে দেশটির খাদ্য ও ঔষধ প্রশাসন (এফডিএ)-এর একটি প্যানেল আলোচনা শুরু করেছে। এই আলোচনার মধ্যেই আবার বুস্টার ডোজের (booster dose) বিষয়ে নতুন একটি নীতি গ্রহণ করা হয়েছে, যেখানে এখন থেকে শুধুমাত্র বয়স্ক এবং গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের বুস্টার ডোজ নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।

এই পরিবর্তনের ফলে সবার জন্য ভ্যাকসিন সহজলভ্য হবে কিনা, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। এফডিএ-এর বিশেষজ্ঞরা ভাইরাসটির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা বজায় রাখতে নিয়মিতভাবে এর উপাদান পরিবর্তনের বিষয়ে আলোচনা করেন।

এবার তাদের বৈঠকের মূল বিষয় হলো, ভাইরাসের নতুন রূপগুলোর (variant) বিরুদ্ধে লড়াই করতে ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারকদের কি কোনো পরিবর্তন আনা উচিত?

গত বছর বাজারে আসা কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনগুলো তৈরি করা হয়েছিল ওমিক্রন (Omicron) পরিবারের JN.1 উপ-ধরনটিকে (sub-variant) লক্ষ্য করে। যদিও এই পরিবারটি এখনো প্রভাবশালী, তবে ভাইরাসটি ক্রমাগত পরিবর্তিত হচ্ছে।

এখন প্রশ্ন উঠেছে, আগের ভ্যাকসিনগুলো কি বর্তমান সময়ের সবচেয়ে সাধারণ উপ-ধরন LP.8.1-এর বিরুদ্ধে যথেষ্ট সুরক্ষা দিতে সক্ষম? বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (World Health Organization) জানিয়েছে, আগের সংস্করণটি এখনো কার্যকর, তবে ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারকরা চাইলে নতুন সংস্করণ তৈরি করতে পারে।

ইউরোপীয় মেডিসিন এজেন্সি (European Medicines Agency) আবার নতুন উপ-ধরনটিকে লক্ষ্য করে ভ্যাকসিন তৈরির সুপারিশ করেছে। এফডিএ-এর কর্মকর্তারা এখনো পর্যন্ত তাদের পছন্দের কথা জানাননি।

তবে, বৈঠকে ভ্যাকসিন প্রস্তুতের পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা হতে পারে। এফডিএ-এর ভ্যাকসিন বিভাগের প্রধান ড. বিনয় প্রসাদ বলেছেন, তারা নতুন ভ্যাকসিন নীতি সম্পর্কে মানুষকে ভালোভাবে বুঝতে এবং তাদের প্রতিক্রিয়া জানাতে আরও সময় দিতে চান।

যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (Centers for Disease Control and Prevention – CDC) আগামী জুনে আসন্ন ভ্যাকসিনগুলোর বিষয়ে সুপারিশ করবে। তাদের সিদ্ধান্তের মধ্যে সবার জন্য ভ্যাকসিন সহজলভ্য রাখা অথবা শুধুমাত্র উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের জন্য ভ্যাকসিন সুপারিশ করা এবং অন্যদের এটি গ্রহণের সুযোগ দেওয়া ইত্যাদি বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।

কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন নিয়ে সরকারের পদক্ষেপের সমালোচনা করে ড. প্রসাদ এবং এফডিএ কমিশনার মার্টি মাকারি এই বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করেছেন। তারা উভয়ই মনে করেন, এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একটি সমন্বিত পদ্ধতির পরিবর্তে ব্যক্তি-বিশেষে ভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।

এই মুহূর্তে, ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলো তাদের ভ্যাকসিন আপডেট করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে এবং সিডিসি’র সুপারিশের ওপর ভিত্তি করে জনগণের জন্য ভ্যাকসিন সরবরাহ করা হবে। কোভিড-১৯ একটি বৈশ্বিক সমস্যা, তাই ভ্যাকসিন সম্পর্কিত যেকোনো সিদ্ধান্ত বিশ্বজুড়ে মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস (Associated Press)।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *