চাকরি ফিরে পাওয়ার লড়াইয়ে জয়! এফডিএ-এর সিদ্ধান্তে কর্মীদের স্বস্তি

যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ঔষধ প্রশাসন (এফডিএ)-এ কর্মী ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। সম্প্রতি সংস্থাটি তাদের কর্মীর সংখ্যা প্রায় ২০ শতাংশ কমিয়ে দেয়, যার ফলস্বরূপ চাকরি হারান কয়েক হাজার কর্মী।

এর মধ্যে ছিলেন ভ্রমণ ব্যবস্থাপক, খাদ্য বিজ্ঞানী এবং তথ্যের অধিকার আইনের (ফ্রিডম অফ ইনফরমেশন অ্যাক্ট বা সংক্ষেপে, ফোয়া) অধীনে নথি সরবরাহ করার দায়িত্বে থাকা কর্মীরা। তবে, কর্মী ছাঁটাইয়ের এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার কয়েক মাসের মধ্যেই এফডিএ-কে তাদের পুরোনো অনেক কর্মীকে ফিরিয়ে আনতে হচ্ছে।

জানা গেছে, এফডিএ-এর অভ্যন্তরীণ কিছু সমস্যার পাশাপাশি বিভিন্ন মহল থেকে আসা চাপ এর মূল কারণ। বিশেষ করে, শিল্পখাত, মার্কিন কংগ্রেস এবং আদালতের সময়সীমা লঙ্ঘনের কারণে এই পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত নিতে তারা বাধ্য হয়েছে।

এফডিএ-এর ভ্রমণ ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা প্রায় ২০ জনের বেশি কর্মীকে বহাল করা হয়েছে। মূলত, খাদ্য নিরাপত্তা পরিদর্শকদের ভ্রমণের ব্যবস্থা করতেন তারা।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, খাদ্য বিজ্ঞানীরা যারা ব্যাকটেরিয়া পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করতেন এবং ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান নিয়ে গবেষণা করতেন, তাদেরও কাজে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও, এখনো পর্যন্ত তাদের কাছ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক নিশ্চয়তা পাওয়া যায়নি।

এছাড়া, তথ্যের অধিকার আইনের (ফোয়া) অধীনে বিভিন্ন আবেদনকারীর কাছে নথি সরবরাহ করার দায়িত্বে থাকা কর্মীদের বিষয়েও একই অনিশ্চয়তা দেখা যাচ্ছে। জানা গেছে, এই বিভাগের প্রায় ১০০ জন কর্মীকে সম্প্রতি ছাঁটাই করা হয়েছিল।

বিষয়টি নিয়ে এফডিএ-এর প্রাক্তন খাদ্য পরিচালক ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের সুসান মেইন উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, “আমি আশা করি কমিশনার মাকারি এই ভুল সিদ্ধান্তগুলো পুনর্বিবেচনা করবেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত কর্মীদের দ্রুত ফিরিয়ে আনবেন।

কমিশনার হিসেবে তাঁর ভাবমূর্তি এখন ঝুঁকির মুখে।” কর্মীদের এই পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত এফডিএ-এর কার্যকারিতা এবং কর্মপরিবেশের উপর কেমন প্রভাব ফেলবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়।

এফডিএ-এর প্রধান কাজ হলো নতুন ওষুধ, চিকিৎসা সরঞ্জাম এবং খাদ্য উপাদানগুলির অনুমোদন দেওয়া, সেই সঙ্গে বিভিন্ন কারখানায় পরিদর্শন চালানো। বর্তমানে, এফডিএ-এর ১৫,০০০ এর বেশি কর্মী যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য দেশে কর্মরত রয়েছেন।

তবে, কর্মী ছাঁটাই এবং পুনর্বহালের এই প্রক্রিয়া নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। স্বাস্থ্য ও মানব পরিষেবা বিভাগের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, এর কারণ হলো “পুরোনো এবং ত্রুটিপূর্ণ মানবসম্পদ অবকাঠামো”, যা বাইডেন প্রশাসন থেকে পাওয়া গিয়েছিল এবং বর্তমানে তা সংস্কার করা হচ্ছে।

যদিও, মুখপাত্রটি নির্দিষ্ট করে জানাননি যে, ঠিক কোন কর্মীদের পুনর্বহাল করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে খাদ্য ও ঔষধের মান নিয়ন্ত্রণে এফডিএ-এর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

তাদের এই ধরনের সিদ্ধান্তের কারণে খাদ্য নিরাপত্তা এবং ঔষধ শিল্পের উপর প্রভাব পড়তে পারে, যা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও উদ্বেগের কারণ হতে পারে। বিশেষ করে, বাংলাদেশের মতো দেশ, যারা যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিভিন্ন খাদ্য ও ঔষধ সামগ্রী আমদানি করে, তাদের জন্য এই বিষয়গুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *