আতঙ্কে এফডিএ! কর্মী সংকট মোকাবিলায় ফের বদল নীতি, তোলপাড়!

যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ঔষধ প্রশাসন (এফডিএ) তাদের কর্মীদের অফিসে ফেরানোর সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে। কর্মী ছাঁটাই ও পদত্যাগের কারণে গুরুত্বপূর্ণ কাজ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কায় এই পরিবর্তন আনা হয়েছে।

এখন থেকে এফডিএ-র কিছু কর্মী, বিশেষ করে যারা ঔষধ পরীক্ষার সঙ্গে যুক্ত, তারা সপ্তাহে অন্তত দুই দিন দূর থেকে কাজ করতে পারবেন।

আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাগুলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, এফডিএ-র অভ্যন্তরীণ ইমেইলে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক এফডিএ কর্মী জানিয়েছেন, ভ্যাকসিন, বায়োটেক ওষুধ এবং চিকিৎসা সরঞ্জাম পরীক্ষার সঙ্গে যুক্ত কর্মীদেরও একই নীতি জানানো হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্যখাতে কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে এর আগে বেশ কিছু বিশৃঙ্খলা দেখা গেছে। এর মধ্যে কর্মীদের চাকরিচ্যুত করা, কিছু কর্মীকে পুনরায় নিয়োগের চেষ্টা এবং গত সপ্তাহে প্রায় ৩,৪০০ কর্মীকে ছাঁটাই করা হয়।

এই সংখ্যাটি এফডিএ-র মোট কর্মীর ১৫ শতাংশের বেশি। জানা গেছে, এফডিএ নীতি ও বিধিবিধান বিষয়ক দপ্তর, জনসংযোগ বিভাগ এবং খাদ্য পরিদর্শক ও তদন্তকারীদের সহায়তা প্রদানকারী দলগুলোও এই ছাঁটাইয়ের শিকার হয়েছে।

তামাক, নতুন ঔষধ, ভ্যাকসিন এবং অন্যান্য পণ্য তদারকির দায়িত্বে থাকা উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদেরও হয় বরখাস্ত করা হয়েছে, নয়তো তারা পদত্যাগ করেছেন।

সাবেক এফডিএ কমিশনার ড. ডেভিড কেসলার এই ছাঁটাইকে ‘বিধ্বংসী, এলোমেলো ও অবিবেচনাপ্রসূত’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। স্বাস্থ্য বিষয়ক মন্ত্রী রবার্ট এফ. কেনেডি জুনিয়র অবশ্য জানিয়েছিলেন, এফডিএ-র চিকিৎসা বিষয়ক পরীক্ষক এবং নিরাপত্তা পরিদর্শকদের ওপর এর কোনো প্রভাব পড়বে না।

এফডিএ-র প্রায় ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাজেট আসে ঔষধ, চিকিৎসা সরঞ্জাম এবং তামাক কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে পাওয়া ফি থেকে। এই অর্থ ব্যবহার করে তারা নতুন পণ্য দ্রুত ও দক্ষতার সঙ্গে পরীক্ষার জন্য হাজার হাজার কর্মী নিয়োগ করে।

উদাহরণস্বরূপ, এফডিএ-র ঔষধ প্রোগ্রামের প্রায় ৭০ শতাংশ অর্থ আসে ব্যবহারকারী ফি থেকে। এই ফি-এর বিষয়টি কংগ্রেস প্রতি পাঁচ বছর পর অনুমোদন করে।

তবে, যদি এফডিএ-র ফেডারেল তহবিল একটি নির্দিষ্ট পরিমাণের নিচে নেমে যায়, তাহলে কোম্পানিগুলো এই ফি দিতে বাধ্য থাকবে না। এমনকী, তারা তাদের দেওয়া অর্থ ফেরতও চাইতে পারে।

এই নিয়মটি তৈরি করা হয়েছে মূলত, কংগ্রেস যেন এফডিএ-কে নিয়মিত অর্থায়ন করতে থাকে এবং বেসরকারি খাতের ওপর পুরোপুরি নির্ভরশীল না হয়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, কর্মীদের দূর থেকে কাজ করার অনুমতি দেওয়ার এই সিদ্ধান্ত সম্ভবত এফডিএ কমিশনার ড. মার্টি মাকারি-র কর্মীদের ধরে রাখা এবং সংস্থার কার্যকারিতা ফিরিয়ে আনার একটি চেষ্টা। গত সপ্তাহে ব্যাপক কর্মী ছাঁটাইয়ের এক দিন পরেই তিনি এফডিএ-র সদর দফতরে প্রথমবার উপস্থিত হয়েছিলেন।

সাবেক স্বাস্থ্য বিভাগের এক কর্মকর্তা স্টিভেন গ্রসম্যান বলেন, ‘কর্মীদের কর্মস্থলে ফেরার সময়কে কাজে লাগানোর সুযোগ দেওয়াটা উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর একটি ভালো পদক্ষেপ।’ তথ্য সূত্র: Associated Press

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *