মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফেডারেল কর্মচারী এবং তাদের অবসরকালীন সুবিধা নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের প্রস্তাব উঠেছে। দেশটির রিপাবলিকান দলের সদস্যরা সরকারি কর্মীদের পেনশন খাতে কাটছাঁট করার পরিকল্পনা করছেন, যা তাদের বাজেট ঘাটতি কমাতে সহায়ক হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এই পদক্ষেপের ফলে সরকারি কর্মীদের অবসর সুবিধা কমে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, যা অনেক কর্মীর মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।
এই প্রস্তাবিত পরিবর্তনের মূল উদ্দেশ্য হলো আগামী দশ বছরে প্রায় ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী প্রায় ৫ লক্ষ ৪৭ হাজার কোটি টাকা) সাশ্রয় করা। এর অংশ হিসেবে ফেডারেল কর্মচারী অবসর গ্রহণ পদ্ধতিতে বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হবে।
এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো কর্মীদের বেতন থেকে অবসর ভাতার জন্য বেশি অর্থ রাখা, আগেভাগে অবসর গ্রহণকারীদের জন্য কিছু সুবিধা বাতিল করা এবং অবসরকালীন ভাতার হিসাবের পদ্ধতি পরিবর্তন করা।
প্রস্তাবিত পরিকল্পনা অনুযায়ী, ফেডারেল কর্মচারী অবসর গ্রহণ সিস্টেমে (Federal Employees Retirement System – FERS) বর্তমানে কর্মরত অনেক কর্মীকে তাদের বেতনের ৪.৪ শতাংশ অর্থ এই খাতে জমা দিতে হবে। আগে এই হার ছিল কম, কারো ক্ষেত্রে ০.৮ শতাংশ বা ৩.১ শতাংশ।
তাছাড়া, যারা আগেভাগে অর্থাৎ ৬২ বছর বয়সের আগে অবসর নিতে চান, তাদের জন্য কিছু অতিরিক্ত সুবিধা বাতিল করার প্রস্তাব করা হয়েছে। বর্তমানে, অবসরকালীন ভাতা হিসাব করার জন্য কর্মীদের সর্বোচ্চ উপার্জনের বছরের গড় ধরা হয়, কিন্তু নতুন নিয়মে এই হিসাব ৫ বছরের গড় হিসেবে করা হবে। এর ফলে অনেক কর্মীর অবসরকালীন ভাতা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যেতে পারে।
এই পরিবর্তনের ফলে কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। কর্মচারী ইউনিয়নগুলোর মতে, এই ধরনের পদক্ষেপের কারণে অভিজ্ঞ কর্মীরা চাকরি ছাড়তে পারেন, যা সরকারি কাজের গুণগত মানের ওপর প্রভাব ফেলবে।
বিশেষ করে, যারা আগেভাগে অবসরের পরিকল্পনা করছেন, তারা তাদের বর্তমান সুবিধাগুলো হারানোর আশঙ্কায় রয়েছেন। উদাহরণস্বরূপ, ফেডারেল কারাগারে কর্মরত কর্মীদের অনেকেই তাদের কর্মজীবনের শুরুতে, যেমন ৪০ বা ৫০ বছর বয়সে অবসর নিতে চান।
নতুন নিয়মে, তারা আগেভাগে অবসর নিলে কিছু সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন।
এই প্রস্তাব এখনো চূড়ান্ত হয়নি এবং এটি প্রতিনিধি পরিষদ ও সিনেটে অনুমোদিত হতে হবে। তবে, প্রস্তাবটি কার্যকর হলে সরকারি কর্মীদের অবসর জীবনে বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে, যা তাদের আর্থিক নিরাপত্তা এবং ভবিষ্যৎ জীবনের ওপর প্রভাব ফেলবে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন