ফেডারেল কর্মচারী ইউনিয়নে ভয়াবহ কর্মী ছাঁটাই: ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে তোলপাড়!

যুক্তরাষ্ট্রে ফেডারেল কর্মচারী ইউনিয়নগুলির উপর ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের নেওয়া কিছু সিদ্ধান্তের ফলস্বরূপ, দেশটির বৃহত্তম সরকারি কর্মচারী ইউনিয়ন ‘আমেরিকান ফেডারেশন অফ গভর্মেন্ট এমপ্লয়িজ’ (এএফজিই) তাদের অর্ধেকের বেশি কর্মী ছাঁটাই করতে চলেছে।

ইউনিয়নের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রায় ৩৫০ জন কর্মীর মধ্যে এখন মাত্র ১৫০ জন বহাল থাকবেন।

সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সরকারি কর্মীদের জন্য সম্মিলিত দর কষাকষির অধিকার বাতিল করার পদক্ষেপ নেওয়ার পরই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

এর ফলে ইউনিয়নগুলোর তহবিল সংগ্রহের প্রধান উৎস, কর্মীদের বেতন থেকে সরাসরি চাঁদা কাটার (union dues) ব্যবস্থাও বন্ধ হয়ে যায়।

এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে এএফজিই সহ অন্যান্য ফেডারেল কর্মচারী ইউনিয়নগুলি আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে।

এএফজিই সূত্রে জানা গেছে, ছাঁটাইয়ের কারণে ইউনিয়ন সংগঠক, জাতীয় প্রতিনিধি, এবং অন্যান্য সহায়ক কর্মীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

আগামী জুন মাস থেকেই এই ছাঁটাই প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে।

ইউনিয়ন সূত্রে আরও জানানো হয়েছে, তারা কর্মীদের অধিকার রক্ষার লড়াই চালিয়ে যাবে।

এ বিষয়ে এএফজিই এক বিবৃতিতে জানায়, “প্রেসিডেন্টের এই পদক্ষেপ আমাদের জন্য একটি বড় ধাক্কা, তবে আমরা হার মানব না।

আমাদের কার্যক্রমকে স্তব্ধ করা বা ভয় দেখিয়ে দমিয়ে রাখা যাবে না।”

ফেডারেল কর্মচারী ইউনিয়নগুলোর অভিযোগ, ট্রাম্প প্রশাসন ইচ্ছাকৃতভাবে সরকারি কর্মীদের অধিকার খর্ব করছে।

গত মার্চ মাসে ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে সরকারি কর্মীদের সম্মিলিত দর কষাকষির অধিকার সীমিত করার ঘোষণা দেন।

এর ফলে, বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মীরা তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

শুধু এএফজিএই-এর অধীনে থাকা প্রায় ৬ লক্ষ ৬০ হাজার কর্মী এই আদেশের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছেন।

এদিকে, ফেডারেল কর্মীদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ইউনিয়ন ‘ন্যাশনাল ট্রেজারি এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন’ (এনটিইউ)-এর দায়ের করা এক মামলার শুনানিতে এক ফেডারেল বিচারক ট্রাম্পের ওই নির্বাহী আদেশের উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছেন।

তবে, এই স্থগিতাদেশ এএফজিই-এর কর্মী ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্তের উপর কোনো প্রভাব ফেলবে কিনা, তা এখনো স্পষ্ট নয়।

আর্থিক ক্ষতির দিক থেকে, ইউনিয়নগুলোর উপর সবচেয়ে বড় আঘাত এসেছে কর্মীদের বেতন থেকে চাঁদা কাটার ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে।

এনটিইউ ইতিমধ্যেই ২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (প্রায় ২০ কোটি টাকার বেশি) চাঁদা রাজস্ব হারিয়েছে এবং তারা জানিয়েছে, এই ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা তাদের পক্ষে কঠিন হয়ে পড়েছে।

যদিও ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর এএফজিই-এর সদস্য সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে, কিন্তু ফেডারেল কর্মী ছাঁটাইয়ের কারণে তারা সদস্য হারাচ্ছে।

ইতিমধ্যেই ১ লক্ষের বেশি সরকারি কর্মচারী চাকরি হারিয়েছেন এবং আরও কর্মী ছাঁটাইয়ের পরিকল্পনা রয়েছে।

এএফজিই, ট্রাম্প প্রশাসনের একাধিক পদক্ষেপের বিরুদ্ধে আদালতে গেছে, যার মধ্যে রয়েছে– শিক্ষানবিশ কর্মীদের বরখাস্ত করা এবং সম্মিলিত দর কষাকষির অধিকার বাতিলের মতো বিষয়গুলো।

এছাড়াও, তারা দেশজুড়ে একাধিক প্রতিবাদ কর্মসূচিরও আয়োজন করেছে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *