ফেডেক্সের স্বপ্নদ্রষ্টা ফ্রেড স্মিথ: প্রয়াত, শোকের ছায়া!

আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ফেডএক্স কর্পোরেশনের প্রতিষ্ঠাতা ফ্রেড স্মিথ, যিনি দ্রুতগতির পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থায় এক নতুন দিগন্তের সূচনা করেছিলেন, ৮০ বছর বয়সে প্রয়াত হয়েছেন। গত কয়েক দশক ধরে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং বিশ্ব অর্থনীতির ওপর তার কোম্পানির গভীর প্রভাব ছিল।

ফেডএক্স শুধু একটি ডেলিভারি সংস্থা ছিল না, বরং এটি বিশ্বজুড়ে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং সরবরাহের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছিল।

ফেডএক্স-এর যাত্রা শুরু হয় ১৯৭৩ সালে, যখন স্মিথ ছোট আকারের পার্সেল এবং গুরুত্বপূর্ণ নথি দ্রুততম সময়ে গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ধারণা নিয়ে কাজ শুরু করেন। তার এই উদ্ভাবনী চিন্তা-ভাবনা আমেরিকান ডাক বিভাগের প্রচলিত পদ্ধতির থেকে অনেক দ্রুত ছিল।

মেরিন কর্পস-এর একজন অভিজ্ঞ সৈনিক ফ্রেড স্মিথ পরবর্তীতে তার কোম্পানিকে একটি বিশ্বব্যাপী পরিবহন ও সরবরাহ নেটওয়ার্কে পরিণত করেন। বর্তমানে ফেডএক্স প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১ কোটি ৭০ লক্ষ চালান সরবরাহ করে।

ফ্রেড স্মিথ ১৯৬৬ সালে ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন সময়ে তিনি একটি ব্যবসায়িক ধারণা তৈরি করেন, যা ‘হাব অ্যান্ড স্পোকস’ নামে পরিচিত।

এই ধারণা অনুযায়ী, একটি কেন্দ্রীয় কেন্দ্রে (হাব) পণ্যগুলি সংগ্রহ করে বিভিন্ন গন্তব্যের দিকে (স্পোকস) দ্রুত পাঠানো হতো। এই পদ্ধতিটিই ফেডএক্সের সাফল্যের মূল ভিত্তি স্থাপন করে।

ফেডএক্স প্রতিষ্ঠার আগে স্মিথ ভিয়েতনাম যুদ্ধে অংশ নিয়ে বীরত্বের জন্য সম্মানিত হয়েছিলেন। তিনি সব সময় বলতেন, ফেডএক্স-এর সাফল্যের পেছনে তার সামরিক জীবনের অভিজ্ঞতা ও প্রশিক্ষণ বিশেষভাবে কাজে লেগেছে।

২০১৬ সালে তিনি সিইও পদ থেকে সরে দাঁড়ালেও, কোম্পানির নির্বাহী চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে গেছেন।

স্মিথ তার কাজের বাইরেও সমাজসেবামূলক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি মেরিন কর্পস স্কলারশিপ ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন সংস্থায় অনুদান প্রদান করেছেন।

সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা এবং মানুষের কল্যাণে কাজ করার মানসিকতা ছিল তার অন্যতম বৈশিষ্ট্য।

ফ্রেড স্মিথের প্রয়াণে শুধু ফেডএক্স-এর কর্মী বা তার পরিবার নয়, বরং বিশ্ব অর্থনীতিতে তার কাজের গভীরতা অনুভব করে অনেকেই শোক প্রকাশ করেছেন।

টেনেসির কংগ্রেসম্যান স্টিভ কোহেন-এর মতে, “ফ্রেড স্মিথ ছিলেন আমাদের অর্থনীতির চালিকাশক্তি এবং তিনি ছিলেন একজন দূরদর্শী প্রতিষ্ঠাতা।”

তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *