যুক্তরাষ্ট্রের একটি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থায় রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ, বিতর্কের জন্ম।
প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ বিতরণে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উঠেছে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সি বা FEMA-র বিরুদ্ধে। বিশেষ করে, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতি সহানুভূতি দেখিয়ে ত্রাণ বিতরণে বিলম্ব বা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে, যা বর্তমানে ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
বাংলাদেশের মতো দুর্যোগপ্রবণ দেশের জন্য এই খবর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এখানেও ত্রাণ বিতরণে স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা একটি প্রধান উদ্বেগের বিষয়।
অভিযোগ উঠেছে, রাজনৈতিক বিবেচনায় FEMA ক্ষতিগ্রস্থদের সাহায্য করতে দ্বিধা বোধ করেছে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন এই অভিযোগের কেন্দ্রে ছিল।
নির্বাচনের সময় তিনি অভিযোগ করেন যে, রিপাবলিকান ভোটারদের সাহায্য থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে, অথবা তাদের প্রতি উদাসীনতা দেখানো হয়েছে। এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুটি পৃথক তদন্ত হয়।
প্রথম তদন্তে, FEMA-কে কোনো পদ্ধতিগত ত্রুটি বা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রমাণের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে, ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে হওয়া দ্বিতীয় তদন্তে ভিন্ন চিত্র উঠে আসে।
এই তদন্তে কর্মীর ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা লঙ্ঘনের প্রমাণ পাওয়া গেছে এবং সম্ভাব্য রাজনৈতিক প্রভাবের ইঙ্গিতও মিলেছে।
তদন্তে জানা যায়, FEMA কর্মীরা দুর্যোগপূর্ণ এলাকায় ত্রাণ বিতরণের সময় ক্ষতিগ্রস্তদের রাজনৈতিক পরিচয় সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ করেছিলেন।
যদিও এই ধরনের তথ্য সংগ্রহের পেছনে সুনির্দিষ্ট কারণ উল্লেখ করা হয়নি, তবে অনেকেই মনে করেন এর মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা প্রদানে পক্ষপাতিত্ব করা হয়েছে।
এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন FEMA-কে ভেঙে দেওয়ারও হুমকি দিয়েছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিভাগের সেক্রেটারি, ক্রিস্টিনা নোয়েম এই তদন্তের ফলাফলের ভিত্তিতে FEMA-র বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এনেছেন।
তিনি কর্মীদের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃতভাবে ত্রাণ বিতরণে বিলম্বিত করার অভিযোগ করেছেন এবং এটিকে ‘রাজনৈতিক বৈষম্য’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
তবে, FEMA-র সাবেক কর্মকর্তারা এই অভিযোগের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছেন। তাদের মতে, তদন্তে রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্বের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
বরং, কর্মীদের ব্যক্তিগত সুরক্ষা এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার অংশ হিসেবে কিছু তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছিল।
এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে, FEMA-র কার্যকারিতা এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
বিশেষ করে, ত্রাণ বিতরণে রাজনৈতিক প্রভাব থাকলে, ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের প্রতি অবিচার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
এই বিতর্ক এমন একটি সময়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে, যখন জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বজুড়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সংখ্যা বাড়ছে।
বর্তমানে FEMA-র সংস্কারের জন্য একটি নতুন পর্যালোচনা পরিষদ গঠিত হয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসন FEMA-কে ভেঙে দেওয়ার বিষয়ে তার আগের অবস্থানে এখনো অনড় রয়েছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন