ফেমার কর্মীদের বিদায়? ত্রাণ কার্যক্রমে অচলাবস্থা, আতঙ্কে সংস্থা

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একটি জরুরি ব্যবস্থাপনা সংস্থা (FEMA) নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার এই গুরুত্বপূর্ণ সংস্থাটির কর্মপরিবেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে।

কর্মীদের ছাঁটাই, তহবিল আটকে যাওয়া এবং আসন্ন ঘূর্ণিঝড় মৌসুমের প্রস্তুতিতে ধীরগতির কারণে এর কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

হোয়াইট হাউসের একটি সূত্র জানাচ্ছে, FEMA ভেঙে দেওয়ার জন্য সেখানকার শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যে আলোচনা চলছে। মূলত, সংস্থাটির কার্যক্রম সীমিত করার জন্য সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের নেওয়া কিছু সিদ্ধান্তের কারণে এমনটা হচ্ছে।

এর মধ্যে রয়েছে কর্মী নিয়োগে নিষেধাজ্ঞা, বিভিন্ন প্রকল্পের অর্থ ছাড়ে জটিলতা এবং কর্মকর্তাদের মধ্যে এক ধরনের ভীতি।

সংস্থা সূত্রে খবর, বর্তমানে FEMA-র অধীনে থাকা একশ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি অনুদান আটকে আছে। এই অর্থ বিভিন্ন রাজ্য, স্থানীয় সরকার এবং অলাভজনক সংস্থাকে প্রদানের কথা ছিল।

কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসনের কিছু নীতির কারণে অর্থ ছাড়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে। এর ফলে দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা এবং বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে ব্যাঘাত ঘটছে।

উদাহরণস্বরূপ, ফায়ার ডিপার্টমেন্টের মতো জরুরি পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলো তাদের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও জনবল পাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা অনুভব করছে।

কর্মীদের মধ্যে ছাঁটাই আতঙ্কও দেখা দিয়েছে। FEMA-র একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তাদের চাকরির মেয়াদ বাড়ানো হবে কিনা, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে।

যাদের চুক্তিভিত্তিক চাকরির মেয়াদ শেষ হতে যাচ্ছে, তাদের অনেকেরই চাকরি নবায়ন করা নাও হতে পারে। এই পরিস্থিতিতে কর্মীরা তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন।

এই পরিস্থিতিতে, আসন্ন ঘূর্ণিঝড় মৌসুমের প্রস্তুতি মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। সাধারণত, মার্চ মাস নাগাদ ঘূর্ণিঝড়ের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করার কথা, কিন্তু বর্তমানে সেই কাজগুলো স্থগিত রয়েছে।

কর্মকর্তারা বলছেন, কর্মীদের মধ্যে এখন একটাই ভয়— আর কি কি সমস্যা সামনে আসে!

তবে, পরিস্থিতি মোকাবিলায় কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। সম্প্রতি, মার্কিন কংগ্রেসের কয়েকজন সদস্য FEMA-কে সরাসরি প্রেসিডেন্টের অধীনে একটি পূর্ণাঙ্গ সংস্থায় পরিণত করার জন্য একটি বিল উত্থাপন করেছেন।

তাদের মতে, এর ফলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার কাজে লাল ফিতার দৌরাত্ম্য কমবে এবং দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হবে।

বাংলাদেশেও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব অপরিসীম। ঘূর্ণিঝড়, বন্যা এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি মোকাবিলায় আমাদের সুসংগঠিত ও কার্যকর প্রস্তুতি প্রয়োজন।

FEMA-র এই অভিজ্ঞতা থেকে আমরা শিখতে পারি যে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় দুর্বলতা থাকলে তা কতটা ভয়াবহ হতে পারে। আমাদেরও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সব ধরনের প্রস্তুতি ও সক্ষমতা নিশ্চিত করতে হবে, যাতে যেকোনো পরিস্থিতিতে দ্রুত ও কার্যকরভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করা যায়।

তথ্য সূত্র: CNN

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *