বিধ্বস্ত ফ্লাইটের শোক: বরফের রাজ্যে ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই!

**বোস্টনে ফিগার স্কেটিং বিশ্বকাপ: শোক ও স্মৃতির মাঝে ক্রীড়ার উদযাপন**

আসন্ন বিশ্ব ফিগার স্কেটিং চ্যাম্পিয়নশিপ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বোস্টনে। তবে এবারের আসরটি শুধু ক্রীড়া প্রতিযোগিতার মঞ্চ নয়, বরং এটি শোক আর স্মৃতির এক গভীর ক্যানভাস। জানুয়ারী মাসের শেষে একটি বিমান দুর্ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের ফিগার স্কেটিং জগতের বেশ কয়েকজন সদস্যের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়।

সেই শোক কাটিয়ে উঠতেই যেন এই আয়োজন।

যুক্তরাষ্ট্রের কানসাস থেকে ওয়াশিংটন ডিসির উদ্দেশ্যে যাত্রা করা একটি বিমানে ছিলেন অনেক তরুণ স্কেটার, তাদের অভিভাবক এবং প্রশিক্ষক। তাঁরা সবাই ছিলেন এই খেলার সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। তাঁদের মধ্যে ছিলেন ওয়াশিংটন ফিগার স্কেটিং ক্লাব এবং বোস্টন স্কেটিং ক্লাবের সদস্যবৃন্দ।

এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় ৬৭ জন নিহত হন। নিহতদের মধ্যে ছিলেন প্রতিভাবান তরুণ স্কেটার ও অভিজ্ঞ প্রশিক্ষকবৃন্দ।

এই দুঃখজনক ঘটনার স্মৃতি আজও তাজা। বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইলিয়া মালিনিন, যিনি এই প্রতিযোগিতায় তাঁর খেতাব রক্ষার জন্য নামবেন, তিনি বলেন, “আমি সবসময় তাদের কথা মনে করি। তাদের অভাব অনুভব করি।

এই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ আমি সেই সকল মানুষের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করতে চাই, যারা আমাদের ছেড়ে চলে গিয়েছেন।”

বোস্টনের টিডি ব্যাংক গার্ডেনে শুরু হতে যাওয়া এই চ্যাম্পিয়নশিপের আয়োজক হলো বোস্টন স্কেটিং ক্লাব। এই ক্লাবের রয়েছে দীর্ঘ ঐতিহ্য। টেনলি আলব্রাইট, ডিক বাটন এবং ন্যান্সি কেরিগানের মতো অলিম্পিক খ্যাতি সম্পন্ন ক্রীড়াবিদ এই ক্লাবেরই গর্ব।

দুর্ঘটনার পর শোকস্তব্ধ হয়ে পরেছিলো পুরো ক্রীড়া জগৎ। নিহতদের স্মরণে শোকসভা ও স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়। সেই অনুষ্ঠানে প্রয়াতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে উপস্থিত ছিলেন ন্যান্সি কেরিগানের মতো খ্যাতিমান ব্যক্তিত্ব।

এই শোক কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করেছে একটি বিশেষ গালা অনুষ্ঠান। যেখানে পারফর্ম করেন ইলিয়া মালিনিনের মতো তারকারা। এই অনুষ্ঠানে নিহতদের পরিবারের জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ করা হয়।

আন্তর্জাতিক স্কেটিং ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, বোস্টনে নিহতদের প্রতি সম্মান জানানো হবে। প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী দিনে নারী এবং যুগল শর্ট প্রোগ্রামের মাঝে একটি বিশেষ শ্রদ্ধানুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।

ইউএস ফিগার স্কেটিংয়ের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্যাম অক্সিয়ার বলেন, “বোস্টন যেন এই দুঃখজনক ঘটনার বিরুদ্ধে ঘুরে দাঁড়ানোর এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।”

এই চ্যাম্পিয়নশিপ যেন শুধু একটি প্রতিযোগিতা নয়, বরং শোককে শক্তিতে পরিণত করার এক অনন্য উদাহরণ। এটি প্রমাণ করে, ক্রীড়া শুধু খেলা নয়, এটি একটি শক্তিশালী বন্ধন, যা মানুষকে শোকের গভীরতা থেকে মুক্তি দিতে পারে।

তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *