যুক্তরাজ্যে অগ্নি নিরাপত্তা সনদের (Fire Safety Certificate) জটিলতায় জর্জরিত হয়ে পড়েছেন এক ফ্ল্যাট মালিক। ত্রুটিপূর্ণ অগ্নি নিরাপত্তা সনদের কারণে তার ফ্ল্যাটটি বিক্রি করা যাচ্ছে না।
যুক্তরাজ্যের স্টিভেনেজ-এ বসবাসকারী জেডভি নামক ওই ব্যক্তি তার ফ্ল্যাটটি বিক্রি করতে চাইলেও, ক্রেতারা ব্যাংক থেকে ঋণ পেতে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। এর মূল কারণ হলো, ফ্ল্যাটটির বিল্ডিংয়ের অগ্নি নিরাপত্তা সনদে স্বাক্ষর করেছেন অ্যাডাম কিজিয়াক নামের একজন প্রকৌশলী।
পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ ওঠায় তার দেওয়া সনদ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
জেডভি-র ফ্ল্যাটটি শেয়ার্ড-ওনারশিপ পদ্ধতিতে কেনা। অর্থাৎ, তিনি ফ্ল্যাটের ৪৫ শতাংশের মালিক এবং বাকি ৫৫ শতাংশের জন্য মেট্রোপলিটন থেমস ভ্যালি হাউজিং (এমটিভিএইচ)-কে ভাড়া পরিশোধ করেন।
বিল্ডিংটির অগ্নি নিরাপত্তা সনদটি (EWS1) বৈধ ছিল, যা ট্রাই ফায়ারের অ্যাডাম কিজিয়াকের দেওয়া। কিন্তু তার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ ওঠায় সম্ভাব্য ক্রেতাদের কাছে ফ্ল্যাটটি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
এমটিভিএইচ এই বিষয়ে কোনো সময়সীমা জানাতে পারছে না, তবে নিয়মিত ভাড়া বাড়াচ্ছে। সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো, কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জানতে পারার তিন মাস পর বাসিন্দাদের জানায়, যার ফলে ফ্ল্যাটটি বিক্রির জন্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হলেও কোনো লাভ হয়নি।
জানা গেছে, ২০১৭ সালের গ্রেনফেল টাওয়ারের অগ্নিকাণ্ডের পর আবাসিক ভবনগুলোর অগ্নি নিরাপত্তা বিষয়ক নিয়মকানুন আরও কঠোর করা হয়।
বিশেষ করে ১৮ মিটারের বেশি উঁচু ভবনগুলোতে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ও অগ্নি নিরাপত্তা সনদ থাকা বাধ্যতামূলক করা হয়। সেই সময় থেকেই এই ধরনের সনদ নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়।
অনেক প্রকৌশলী ও নির্মাণ সামগ্রীর অভাবে প্রয়োজনীয় সনদ পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। এই পরিস্থিতিতে, অ্যাডাম কিজিয়াকের বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ ওঠায় কয়েকশ’ ভবনের বাসিন্দারা বিপাকে পড়েছেন।
কিজিয়াক ২০১৯ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ‘ইনস্টিটিউশন অফ ফায়ার ইঞ্জিনিয়ার্স’-এর সদস্য ছিলেন। তার বিরুদ্ধে অদক্ষতা ও অসদাচরণের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে বহিষ্কার করা হয়।
অভিযোগ রয়েছে, তিনি সনদ তৈরিতে স্বাক্ষর জাল করেছেন। যদিও কিজিয়াক তার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
বর্তমানে, জেডভি-র ফ্ল্যাটটির নতুন করে সার্ভে করা হয়েছে এবং খুব শীঘ্রই এর ফল পাওয়া যাবে। আশা করা হচ্ছে, নতুন কাগজপত্র হাতে পাওয়ার পর তিনি গ্রীষ্মকালের মধ্যে তার ফ্ল্যাটটি বিক্রি করতে পারবেন।
এই ঘটনার মাধ্যমে, আবাসিক ভবনের নিরাপত্তা এবং নির্ভরযোগ্য অগ্নি নিরাপত্তা সনদের গুরুত্ব আরও একবার প্রমাণিত হলো।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান