নতুন পোপ নির্বাচিত: আমেরিকার নাগরিক রবার্ট প্রিভোস্ট এখন পোপ লিও চতুর্দশ
ভ্যাটিকান সিটি থেকে পাওয়া খবরে জানা গেছে, ২০২৩ সালে পোপ ফ্রান্সিস কর্তৃক ভ্যাটিকানে গুরুত্বপূর্ণ পদে নিযুক্ত হওয়া রবার্ট প্রিভোস্ট অবশেষে পোপ নির্বাচিত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার, ৮ই মে, ২০২৫ তারিখে তিনি পোপ লিও চতুর্দশ হিসেবে অভিষিক্ত হন।
এর মাধ্যমে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে তিনিই প্রথম পোপ হওয়ার বিরল সম্মান অর্জন করেছেন।
৬৯ বছর বয়সী প্রিভোস্টের এই পদে আসাটা সহজ ছিল না। কারণ, বিশ্বে আমেরিকার রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে, আগে কোনো মার্কিন নাগরিককে পোপ হিসেবে নির্বাচিত করার ক্ষেত্রে একটা দ্বিধা ছিল।
অবশেষে সেই অচলায়তন ভেঙে নতুন দিগন্তের সূচনা হলো।
প্রিভোস্টের জন্ম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোতে। তবে তিনি পেরুর নাগরিকত্বও গ্রহণ করেছেন।
দীর্ঘদিন তিনি পেরুতে মিশনারি এবং আর্চবিশপ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এই কারণে লাতিন আমেরিকার দেশগুলোতে ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে তার নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে।
পোপ হওয়ার আগে কার্ডিনাল প্রিভোস্ট ছিলেন প্রভাবশালী। তিনি ছিলেন সেন্ট অগাস্টিনের প্রতিষ্ঠিত ১৩ শতকের ধর্মীয় সংগঠন অগাস্টিনিয়ানদের প্রধান।
পোপ ফ্রান্সিস তাকে বিশেষভাবে মূল্যায়ন করতেন। ২০১৪ সালে তাকে পেরুতে ফিরিয়ে আনা হয় এবং তিনি সেখানে চিকলায়োর আর্চবিশপ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
২০১৫ সালে তিনি পেরুর নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন। এরপর ২০২৩ সালে তিনি ভ্যাটিকানে ফিরে আসেন এবং পোপ ফ্রান্সিস তাকে পোপীয় লাতিন আমেরিকা বিষয়ক কমিশনের প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেন।
এই পদে থেকে তিনি লাতিন আমেরিকার ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন।
পোপ হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর পেরুর রাজধানী লিমার ক্যাথিড্রালের ঘণ্টাগুলো বেজে ওঠে। খবরটি ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই চারপাশের মানুষজন তাদের আনন্দ প্রকাশ করেন এবং পোপের প্রতি তাদের শুভেচ্ছা জানান।
স্থানীয় শিক্ষক ইসাবেল পানেজ জানান, “আমাদের জন্য এটা গর্বের বিষয় যে এমন একজন পোপ নির্বাচিত হয়েছেন যিনি আমাদের দেশকে প্রতিনিধিত্ব করেন। আমরা চাই তিনি পেরু ভ্রমণ করুন।”
কার্ডিনাল প্রিভোস্টের পুরনো ডাইওসিস, চিকলায়োর যোগাযোগ পরিচালক ফিদেল পুরিসাকা ভিগিল জানান, প্রিভোস্ট প্রতিদিন সকালে প্রার্থনা করতেন এবং অন্যান্য পুরোহিতদের সঙ্গে নাস্তা করতেন।
তিনি আরও বলেন, “কত সমস্যা আসুক না কেন, তিনি সবসময় হাসিখুশি ও আনন্দিত থাকেন।”
এই ঐতিহাসিক ঘটনার মাধ্যমে ক্যাথলিক চার্চে নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা হলো। এখন সবার দৃষ্টি নতুন পোপের নেতৃত্বের দিকে, যিনি একইসঙ্গে আমেরিকান এবং পেরুর মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস