শিরোনাম: “স্বাস্থ্যই সম্পদ: শরীরের আকার নয়, সুস্থতাই আসল”— প্রমাণ করছেন বাংলাদেশের বাইরের কিছু মানুষ
আজকাল স্বাস্থ্য আর শরীরের মাপ নিয়ে সমাজে নানা আলোচনা চলছে। একদিকে যেমন রোগা হওয়ার প্রবণতা বাড়ছে, তেমনই আবার অনেকেই শরীরের গঠন নিয়ে নতুন করে ভাবছেন।
সম্প্রতি এমন কিছু মানুষের কথা জানা গেছে, যাঁরা শরীরের আকারকে গুরুত্ব না দিয়ে সুস্থ জীবনযাপনের উপর জোর দিচ্ছেন।
এদের মধ্যে একজন হলেন যুক্তরাজ্যের বেকি স্কট। তিনি “মিসফিটস ওয়ার্কআউট” নামে একটি ফিটনেস ক্লাস চালান, যেখানে সব ধরনের শরীরের মানুষ যোগ দেন।
তাঁর ক্লাসে যোগ দেওয়ার মূল উদ্দেশ্য হলো— শরীরচর্চার মাধ্যমে আত্মবিশ্বাস বাড়ানো। বেকি জানান, “আমি এমন অনেক মানুষকে চিনি, যাঁরা হয়তো ছোট আকারের শরীরেও আমার মতো আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন না।
শুধু বেকি নন, এমন আরও অনেকে আছেন, যাঁরা শরীরচর্চা ও সুস্থ জীবনযাপনের মাধ্যমে নিজেদের নতুন করে খুঁজে পেয়েছেন।
তাঁদের মধ্যে রয়েছেন—ট্রিনা নিকোল, যিনি একজন নৃত্যশিল্পী ও ফিটনেস উদ্যোক্তা। শারীরিক গঠন নিয়ে সমাজের কিছু প্রচলিত ধারণা ভেঙে দিয়ে তিনি প্রমাণ করেছেন, স্বাস্থ্যবান হওয়ার জন্য শরীরের আকার কোনো বাধা নয়।
তিনি বলেন, “আমি খুব স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন করি। স্বাস্থ্য শুধু শরীরের গঠন নিয়ে নয়, মানসিক স্বাস্থ্যও এর সঙ্গে জড়িত।
ওয়েলসের রিহান কাটার নামের একজন নারী, যিনি ওজন কমানোর জন্য অস্ত্রোপচার করানোর পর ফিটনেস জগতে প্রবেশ করেন।
তিনি এখন “স্ট্রংওম্যান” প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে চান। রিহান মনে করেন, শরীরের আকার যাই হোক না কেন, নিজের প্রতি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করাটাই আসল।
এই প্রসঙ্গে ইউনিভার্সিটি অফ মিশিগানের অধ্যাপক ড. জেফরি হোরোভিটস-এর গবেষণা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তাঁর মতে, নিয়মিত শরীরচর্চা শরীরের ভেতরে চর্বির গঠনকে উন্নত করে, যা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।
তবে, তিনি এটাও মনে করেন, শুধু ব্যায়ামই সব সমস্যার সমাধান নয়। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের জন্য ব্যায়ামের পাশাপাশি সঠিক খাদ্যাভ্যাসও জরুরি।
শারীরিক স্বাস্থ্যের পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যকেও গুরুত্ব দিতে হবে। কারণ, মানসিক স্বাস্থ্য ভালো না থাকলে অনেক সময় শরীরচর্চায় মন বসানো কঠিন হয়ে পড়ে।
তাই, শরীরচর্চার পাশাপাশি নিজের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকেও খেয়াল রাখা প্রয়োজন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অতিরিক্ত ওজনের কারণে কিছু স্বাস্থ্য ঝুঁকি থাকে। তবে, নিয়মিত শরীরচর্চা ও সঠিক খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে সেই ঝুঁকি কমানো সম্ভব।
স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের মূল মন্ত্র হলো— শরীরের আকার নিয়ে চিন্তা না করে, নিজের শরীরের প্রতি যত্ন নেওয়া এবং সুস্থ থাকার চেষ্টা করা।
সবশেষে, এমন অনেক মানুষ আছেন, যাঁরা শারীরিক গঠনকে অতিক্রম করে সুস্থ জীবনযাপনের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তাঁদের জীবন থেকে আমরা শিখতে পারি, স্বাস্থ্যই আসল— শরীরের আকার নয়।
তথ্যসূত্র: The Guardian