আকাশ পথে ভ্রমণের সময় টিকেটের শ্রেণী উন্নীত করা অনেকেরই স্বপ্ন থাকে, বিশেষ করে যখন দীর্ঘ ভ্রমণের কথা আসে। ইকোনমি ক্লাসের সংকীর্ণ আসনে বসে বিজনেস ক্লাসের আরামদায়ক সিটগুলোর দিকে তাকিয়ে ঈর্ষা হওয়াটা স্বাভাবিক।
তবে, কিভাবে এই সুযোগটি পাওয়া যেতে পারে, সেই বিষয়ে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন বিমান পরিবহন বিশেষজ্ঞরা। আসুন, জেনে নেওয়া যাক কিভাবে আপনার টিকিট আপগ্রেড করার সম্ভাবনা বাড়ানো যায়।
বর্তমানে বিনামূল্যে বিজনেস বা ফার্স্ট ক্লাসে আপগ্রেড পাওয়া বেশ কঠিন। কারণ বিমান সংস্থাগুলো এখন আপগ্রেডকে একটি আয়ের উৎস হিসেবে বিবেচনা করে। তবে, একেবারে যে সুযোগ নেই, তা নয়। কিছু কৌশল অবলম্বন করলে এখনও টিকিট আপগ্রেড করা যেতে পারে।
প্রথমেই আসা যাক, কারা আপগ্রেডের যোগ্য? সাধারণত, যারা নিয়মিত ভ্রমণ করেন এবং বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের লয়্যালটি প্রোগ্রামের সদস্য, তাদের এই সুবিধা পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। ডেল্টা, ইউনাইটেড, এবং আমেরিকান এয়ারলাইন্সের মতো সংস্থাগুলো তাদের গ্রাহকদের জন্য বিভিন্ন স্তরের সদস্যপদ তৈরি করেছে।
এই সদস্যপদ অনুযায়ী, যারা বেশি ভ্রমণ করেন, বেশি দূরত্ব পাড়ি দেন অথবা টিকিটের পেছনে বেশি অর্থ খরচ করেন, তাদের আপগ্রেডের সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
তবে, কিছু বিষয় আপনাকে আপগ্রেডের জন্য আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে পারে। যেমন, যদি কোনো কারণে আপনার ফ্লাইট বাতিল হয় বা অন্য কোনো সমস্যা হয়, সেক্ষেত্রে এয়ারলাইন্স আপনাকে একটি ভালো অফার দিতে চাইতে পারে। এছাড়াও, যদি কোনো ফ্লাইট অতিরিক্ত যাত্রী ধারণ করে এবং আপনাকে অন্য ফ্লাইটে যেতে বলা হয়, তাহলে ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি আপগ্রেডের আবেদন করার সুযোগ থাকে।
কখন আবেদন করবেন? টিকিট আপগ্রেডের জন্য সঠিক সময় নির্বাচন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত, বোর্ডিংয়ের আগে, গেট এজেন্টদের সঙ্গে কথা বলা সবচেয়ে ভালো। কারণ, বোর্ডিংয়ের সময় তাদের ব্যস্ততা সবচেয়ে বেশি থাকে।
তাই, শান্তভাবে এবং ভদ্রভাবে কথা বলতে হবে। আপনার বিশেষ কোনো উপলক্ষ থাকলে, সেটি উল্লেখ করতে পারেন, যা আপনার সম্ভাবনা কিছুটা বাড়াতে পারে।
ফ্লাইটে উঠার পরে আপগ্রেডের সম্ভাবনা খুবই কম থাকে। যদি সিটে কোনো সমস্যা থাকে, যেমন—আর্মরেস্ট বা ট্রে টেবিল ভাঙা থাকলে, সেক্ষেত্রে অন্য সিটের জন্য আবেদন করতে পারেন।
এবার আসা যাক, কিভাবে আপগ্রেড কিনবেন? টিকিট আপগ্রেড করার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো এটি কিনে নেওয়া। তবে, এখানেও সময়ের গুরুত্ব রয়েছে। আপগ্রেডের দাম সাধারণত চাহিদা ও যোগানের ওপর নির্ভর করে।
ফ্লাইটে প্রিমিয়াম সিট খালি থাকলে, টিকিটের দাম কমার সম্ভাবনা থাকে। তাই, সুযোগ বুঝে কিনে নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
বর্তমানে অনেক এয়ারলাইন্স আপগ্রেডের জন্য বিডিংয়ের সুযোগ দেয়। এর মাধ্যমে আপনি একটি নির্দিষ্ট দাম প্রস্তাব করতে পারেন, যা এয়ারলাইন্স গ্রহণ করলে আপনি আপগ্রেড পেতে পারেন। এই ক্ষেত্রে কম দাম প্রস্তাব করার চেয়ে মাঝামাঝি একটি দাম প্রস্তাব করা বেশি কার্যকর হতে পারে।
অতএব, যারা ভ্রমণের সময় আরামদায়ক অভিজ্ঞতা পেতে চান, তাদের জন্য টিকিট আপগ্রেডের বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক কৌশল এবং সময়ে আবেদন করলে, আপনিও পেতে পারেন আপনার স্বপ্নের উড়ান।
তথ্য সূত্র: Travel and Leisure