বিশ্বের বুকে এমন কিছু স্থান রয়েছে যা প্রকৃতির অপার বিস্ময় নিয়ে আসে, আর তেমনই একটি জায়গা হলো ফ্যারো দ্বীপপুঞ্জের লেক সোরভ্যাগস্ভাটন।
এই দ্বীপপুঞ্জটি ডেনমার্কের অধীনে, যা আইসল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডের মাঝে অবস্থিত।
লেক সোরভ্যাগস্ভাটন-এর সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিকটি হলো এর “ভাসমান” রূপ, যা দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়।
আসলে, ১.৩১ বর্গমাইলের এই বিশাল হ্রদটি এত উঁচু স্থানে অবস্থিত যে, বিশেষ একটি অ্যাঙ্গেল থেকে দেখলে মনে হয় যেন এটি সমুদ্রের উপরে ভেসে আছে।
এই দৃশ্য এতটাই মোহনীয় যে, পর্যটকদের কাছে এটি “প্রকৃতির অনন্ত জলধারা” নামে পরিচিতি লাভ করেছে।
লেকটির পাশেই রয়েছে সবুজ পাহাড় আর পাথুরে ভূমি, যা এই দৃশ্যের সৌন্দর্য আরও কয়েকগুণ বাড়িয়ে তোলে।
তবে, এই “ভাসমান” দৃশ্যের আসল রহস্য হলো দৃষ্টিভ্রম।
লেকের জলের উপরিভাগ এবং আটলান্টিক মহাসাগরের মধ্যেকার উচ্চতার পার্থক্য আর বিশেষ একটি কোণ থেকে ছবি তোলার কারণেই এমনটা মনে হয়।
অনেকটা আমাদের চোখের ধাঁধার মতো, যেখানে সবকিছু স্বাভাবিকের চেয়ে ভিন্ন দেখায়।
লেক সোরভ্যাগস্ভাটন থেকে বোসডালাফোসুর নামক একটি জলপ্রপাত প্রায় ৯৮ ফুট নিচে আটলান্টিক মহাসাগরে গিয়ে পড়েছে।
এই জলপ্রপাতকে কেন্দ্র করে প্রকৃতি যেন তার আপন খেয়ালে একটি “ইনফিনিটি পুল”-এর সৃষ্টি করেছে।
এছাড়াও, জলপ্রপাতের পাশ থেকে গেটিসকোরাড্রাঙুর নামে একটি সমুদ্রের স্তম্ভও দেখা যায়, যা এই স্থানের সৌন্দর্যকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে।
পর্যটকদের জন্য এখানকার আকর্ষণীয় দিকগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো ট্রেলানিপা পাহাড়ের দিকে হেঁটে যাওয়া।
এই পথে হেঁটে যেতে প্রায় ৪৫ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টা সময় লাগে।
পাহাড়ের উপরে উঠলে পুরো লেকের মনোরম দৃশ্য উপভোগ করা যায়।
এই অঞ্চলে ভ্রমণের জন্য একটি নির্দিষ্ট ফি দিতে হয়, যা সাধারণত ড্যানিশ ক্রোন (DKK)-এ পরিশোধ করতে হয়।
বর্তমানে, ১ ড্যানিশ ক্রোন-এর বাংলাদেশি মূল্যের কাছাকাছি হিসাব করলে এটি একটি আকর্ষণীয় ভ্রমণের সুযোগ হতে পারে।
যারা প্রকৃতির এই বিস্ময়কর রূপ দেখতে চান, তাদের জন্য এটি একটি অসাধারণ গন্তব্য হতে পারে।
এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য আর “ভাসমান” লেকের দৃশ্য যেকোনো ভ্রমণকারীর কাছে স্বপ্নের মতো।
তাই, যারা নতুন কিছু অভিজ্ঞতা অর্জন করতে চান, তাদের জন্য ফ্যারো দ্বীপপুঞ্জের এই লেক সোরভ্যাগস্ভাটন হতে পারে একটি আদর্শ স্থান।
তথ্য সূত্র: Travel and Leisure