ফ্লোরিডায় কুমির আক্রমণের কারণ উন্মোচন: মানুষই দায়ী!

ফ্লোরিডার একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে কুমিরের আক্রমণের মূল কারণ মানুষই। সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণায় জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় কুমিরের আক্রমণের পেছনে কুমিরের আগ্রাসন নয়, বরং মানুষের ঝুঁকিপূর্ণ আচরণই দায়ী।

ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা জানিয়েছেন, ১৯৪৮ সাল থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৫০০টি কুমিরের আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে, যার মধ্যে ২৭ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে এবং গুরুতর আহত হয়েছেন আরও ৩৩৯ জন।

গবেষণায় দেখা গেছে, কুমিরেরা সাধারণত মানুষের প্রতি আক্রমণাত্মক হয় না। বরং মানুষ যখন তাদের স্বাভাবিক আবাসস্থলে বিপজ্জনক আচরণ করে, তখনই তারা আক্রান্ত হয়।

যেমন, যারা কুমিরের আশেপাশে সাঁতার কাটে বা তাদের বসবাসের এলাকায় প্রবেশ করে, তাদের উপর আক্রমণের ঝুঁকি বেশি থাকে।

গবেষকরা আরও জানিয়েছেন, কুমিরেরা সাধারণত মানুষের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়াতে চায় না। বরং মানুষ যখন তাদের আকর্ষণ করে, যেমন—পানিতে ঝাঁপ দেওয়া, সাঁতার কাটা বা কুমিরের এলাকায় প্রবেশ করা—তখনই তারা প্রতিক্রিয়া দেখায়।

ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্যপ্রাণী বিষয়ক অধ্যাপক ফ্রাঙ্ক মাজোত্তি বলেন, “এই গবেষণা থেকে আমরা জানতে পারি, মানুষ যদি তাদের চারপাশের পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন থাকে এবং ঝুঁকিপূর্ণ কাজগুলো এড়িয়ে চলে, তাহলে অনেক আক্রমণই প্রতিরোধ করা যেতে পারে।

মাজোত্তি আরও জানান, আক্রমণের জন্য দায়ী কুমিরটিকে সাধারণত মেরে ফেলা হয়, যা মানুষের ঝুঁকিপূর্ণ আচরণের ফল। সচেতনতা বৃদ্ধি করে মানুষ যেমন নিজেদের রক্ষা করতে পারে, তেমনি কুমিরদের জীবনও বাঁচানো সম্ভব।

তিনি আরও বলেন, “এই গবেষণাটি মূলত আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, কুমির অধ্যুষিত অঞ্চলে বিনোদনমূলক কার্যকলাপের সময় সচেতনতা এবং সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া মানুষের জীবন ও বন্যপ্রাণী—উভয়কেই রক্ষা করতে পারে।

গবেষণায় বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপকদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে, কুমির সম্পর্কে নিরাপদ আচরণবিধি প্রচারের জন্য বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করতে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, জুন মাস থেকে ফ্লোরিডায় কুমিরের প্রজনন মৌসুম শুরু হয়। তাই এ সময়ে কুমিরের আক্রমণ থেকে বাঁচতে তাদের এড়িয়ে চলা উচিত।

কুমিরের আক্রমণ থেকে বাঁচতে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা যেতে পারে। যেমন—নিরাপত্তা চিহ্ন অনুসরণ করা, দিনের বেলায় সাঁতার কাটা, বেশি গাছপালা আছে এমন জায়গায় সাঁতার না কাটা, ছোট কুমির থেকে দূরে থাকা, নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা, বন্য কুমিরকে খাবার না দেওয়া এবং শিশু ও পোষা প্রাণীর প্রতি খেয়াল রাখা।

তথ্য সূত্র: পিপল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *