ফ্লোরিডার প্রাক্তন শেরিফের ডেপুটি কর্তৃক এক মার্কিন বিমান সেনার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এবার মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন খ্যাতিমান আইনজীবী। নিহত ২৩ বছর বয়সী বিমান সেনা রজার ফোর্টসনের পরিবারের পক্ষ থেকে এই মামলা দায়ের করা হবে।
জানা গেছে, মামলার প্রধান আইনজীবী হিসেবে থাকছেন মানবাধিকার বিষয়ক আইনজীবী বেন ক্রাম্প।
২০২৪ সালের মে মাসে, ফোর্ট ওয়লটন বিচ এলাকার একটি অ্যাপার্টমেন্টে অভিযান চালানোর সময়, প্রাক্তন ডেপুটি এডি ডুরান গুলি করে হত্যা করেন রজার ফোর্টসনকে।
ঘটনার সূত্রপাত হয় একটি পারিবারিক কলহের মিথ্যা অভিযোগ থেকে। গুলির ঘটনার পর ডেপুটি ডুরানকে বরখাস্ত করা হয়।
বর্তমানে তার বিরুদ্ধে একটি ফৌজদারি মামলা চলছে, যেখানে তিনি হত্যার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
মামলার বিষয়ে আইনজীবী বেন ক্রাম্প জানিয়েছেন, ডেপুটি ডুরান অতিরিক্ত এবং অসাংবিধানিকভাবে প্রাণঘাতী শক্তি ব্যবহার করেছেন।
মামলার অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হবে যে, শেরিফের অফিসের প্রশিক্ষণ এবং তদারকিতে গুরুতর ত্রুটি ছিল এবং যে অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সে ঘটনাটি ঘটেছিল, তারা ভুল এবং যাচাইবিহীন তথ্য সরবরাহ করেছিল।
ঘটনার বিবরণ অনুযায়ী, ডেপুটি ডুরান ফোর্টসনের অ্যাপার্টমেন্টে যান, যেখানে একটি পারিবারিক গোলযোগের অভিযোগ জানানো হয়েছিল।
দরজা খোলার পরে, ফোর্টসন তার পাশে বন্দুক ধরে ছিলেন, সেটি নিচের দিকে তাক করা ছিল।
কর্মকর্তাদের ভাষ্যমতে, ডুরান ফোর্টসনকে বন্দুক ফেলতে বলার আগে তাকে একাধিকবার গুলি করেন।
এই ঘটনার পর, ওকালুসা কাউন্টি শেরিফ অফিসের অভ্যন্তরীণ তদন্তে জানা যায়, যখন ডুরান গুলি চালান, তখন তার জীবন বিপদের মধ্যে ছিল না।
এই যুক্তিতে শেরিফ এরিক অ্যাডেন ডুরানকে বরখাস্ত করেন। নিহত রজার ফোর্টসন আটলান্টায় বেড়ে ওঠেন এবং ২০১৯ সালে বিমান বাহিনীতে যোগ দেন।
তিনি ৪র্থ স্পেশাল অপারেশনস স্কোয়াড্রনে বিশেষ মিশন বিমানচালক হিসেবে কাজ করতেন।
এই ঘটনাটি যুক্তরাষ্ট্রে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হাতে কৃষ্ণাঙ্গদের মৃত্যুর ক্রমবর্ধমান তালিকার একটি অংশ। এটি ফ্লোরিডার ‘স্ট্যান্ড ইউর গ্রাউন্ড’ আইন নিয়ে নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
এই আইনের অধীনে, কোনো ব্যক্তি নিজের জীবন রক্ষার জন্য প্রাণঘাতী শক্তি ব্যবহার করতে পারেন, যদি তিনি অনুভব করেন যে তার জীবন হুমকির মুখে।
মামলার শুনানির তারিখ এখনো নির্ধারিত হয়নি, তবে আগামী ২০ মে প্রি-ট্রায়াল শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
অভিযুক্ত এডি ডুরান বর্তমানে জামিনে রয়েছেন।
বেন ক্রাম্প একজন সুপরিচিত আইনজীবী, যিনি মানবাধিকার ও অন্যায্য মৃত্যুর মামলাগুলোর জন্য পরিচিত।
এর আগে তিনি ব্রেওনা টেইলর, জর্জ ফ্লয়েড এবং মাইকেল ব্রাউন সহ আরও অনেকের পরিবারের পক্ষে মামলা লড়েছেন।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস