ফ্লোরিডার একজন মৎস্যজীবীকে বন্যপ্রাণী হত্যা এবং পরিবেশ দূষণের অভিযোগে কারাদণ্ড ও জরিমানার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জানা গেছে, অভিযুক্ত ব্যক্তি ডলফিন নিধনের জন্য বিষাক্ত রাসায়নিক এবং বন্দুক ব্যবহার করতেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের এই ঘটনায় পরিবেশ প্রেমী এবং প্রাণী অধিকার কর্মীদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
অভিযুক্ত জ্যাকারী ব্রান্ডন বারফিল্ড নামের ৩১ বছর বয়সী ওই মৎস্যজীবীকে এক মাসের কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৫১,০০০ মার্কিন ডলার জরিমানা করা হয়েছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ৫৬ লক্ষ টাকার সমান।
অভিযোগ রয়েছে, বারফিল্ড তার বাণিজ্যিক নৌকায় আসা ক্লায়েন্টদের জন্য মাছ ধরার সময় ডলফিনদের তাড়ানোর উদ্দেশ্যে এই কাজ করতেন। তিনি প্রথমে মাছের টোপে ‘মেথোমিল’ নামক কীটনাশক মিশিয়ে তা ডলফিনদের খাওয়াতে দেন।
এরপর তিনি ১২-গেজ শটগান ব্যবহার করে বেশ কয়েকবার ডলফিনদের ওপর গুলি চালান।
যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, বারফিল্ড ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে এই অপরাধ করেন। একবার তো তিনি শিশুদের সামনেই ডলফিনদের গুলি করেন। এমনকি, তার নৌকায় থাকা এক ডজনের বেশি সহকর্মীর সামনেও তিনি একই কাজ করেন।
সরকারি কৌঁসুলী মিশেল স্পাভেইন বারফিল্ডের এই কাজকে ‘স্বার্থপর’ এবং ‘নিষ্ঠুর’ বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি আরও বলেন, এটি ছিল বন্যপ্রাণীর প্রতি চরম অবজ্ঞা এবং স্থানীয় পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি স্বরূপ।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, বারফিল্ড প্রায় ২৪ থেকে ৭০টি ডলফিনকে বিষযুক্ত মাছ খাইয়েছেন। ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফিয়ারিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (NOAA) -এর মৎস্য বিভাগ (Fisheries) বারফিল্ডের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে।
কর্তৃপক্ষের কাছে খবর ছিল, তিনি নিয়মিত ডলফিন হত্যা করছেন। তদন্তে বারফিল্ড স্বীকার করেছেন, ডলফিনগুলো তার শিকার করা মাছ খেয়ে ফেলত বলেই তিনি তাদের মারতে বাধ্য হয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী, সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণী হত্যা একটি গুরুতর অপরাধ। বারফিল্ড দুটি অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন: একটি হলো সামুদ্রিক প্রাণী হত্যা এবং অন্যটি ফেডারেলভাবে নিষিদ্ধ কীটনাশক ব্যবহার।
কারাদণ্ডের মেয়াদ শেষে তাকে এক বছরের জন্য তত্ত্বাবধানে থাকতে হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের ঘটনা পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করে এবং সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্যের জন্য হুমকিস্বরূপ। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও তাদের প্রতি মানবিক আচরণ করা অত্যন্ত জরুরি।
পৃথিবীর অনেক দেশেই বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে কঠোর আইন প্রচলিত রয়েছে।
তথ্য সূত্র: পিপল