ফ্লোরিডার জ্যাকসনভিলে (Jacksonville) পুলিশের হাতে এক কৃষ্ণাঙ্গ কলেজ ছাত্রকে মারধর ও গাড়ি থেকে টেনে বের করার ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। গত ১৯শে ফেব্রুয়ারির এই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে মানবাধিকার কর্মী ও আইনজীবীরা পুলিশের নৃশংসতার অভিযোগ তুলেছেন।
আহত ওই ছাত্রের আইনজীবী জানিয়েছেন, মারধরের ফলে উইলিয়াম ম্যাকনিল জুনিয়র (William McNeil Jr.) গুরুতর আহত হয়েছেন, যার মধ্যে রয়েছে কনকাশন এবং ঠোঁটে দাঁতের আঘাত।
ঘটনার বিবরণ অনুযায়ী, ২১ বছর বয়সী উইলিয়াম ম্যাকনিল জুনিয়র, যিনি নর্থ ক্যারোলাইনার একটি ঐতিহাসিক ব্ল্যাক কলেজে (historically Black college) পড়াশোনা করেন, ট্রাফিক আইন ভঙ্গের অভিযোগে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের সম্মুখীন হন। ঘটনার সময় তিনি গাড়িতে ছিলেন এবং পুলিশের সাথে কথা বলছিলেন।
ভিডিওতে দেখা যায়, পুলিশ তাকে প্রথমে গাড়ি থেকে বের হতে বলে এবং পরে তাকে মারধর করে। এরপর তাকে জোর করে গাড়ি থেকে বের করে আনা হয়।
এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন মানবাধিকার আইনজীবী ও সুপরিচিত ব্যক্তিত্বরা। তাদের মতে, পুলিশের এমন আচরণ সম্পূর্ণ বেআইনি এবং মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন।
তারা এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
ঘটনার বিষয়ে ফ্লোরিডার রিপাবলিকান গভর্নর রন ডিস্যান্টিস (Ron DeSantis) অবশ্য পুলিশের পক্ষ নিয়েছেন। তিনি বলেছেন ভিডিওটি সম্ভবত কোনো ‘বিশেষ উদ্দেশ্য’ চরিতার্থ করার জন্য সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করা হয়েছে।
তবে, তিনি ঘটনার ভিডিওটি দেখেননি বলেও জানান।
অন্যদিকে, জ্যাকসনভিলে শেরিফ টি.কে. ওয়াটার্স (T.K. Waters) বলেছেন, ঘটনার সম্পূর্ণ চিত্র ভিডিওতে নেই। তিনি জনসাধারণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, ভিডিওর ভিত্তিতে কোনো সিদ্ধান্তে আসার আগে ঘটনার পেছনের অন্য বিষয়গুলো বিবেচনা করতে হবে।
ঘটনার শিকার উইলিয়াম ম্যাকনিলের আইনজীবী বেন ক্রাম্প (Ben Crump) বলেছেন, “এই ঘটনা আমেরিকার জন্য অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়। একজন কৃষ্ণাঙ্গ নাগরিক হিসেবে উইলিয়াম ম্যাকনিলের ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার রয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “একজন মানুষের প্রতি মানুষ হিসেবে সম্মান দেখানোর পরিবর্তে পুলিশ তাকে যেভাবে নির্যাতন করেছে, তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।”
এই ঘটনার পর অনেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে, সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। মানবাধিকার কর্মীরা মনে করেন, এই ঘটনা মানবাধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হতে পারে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস (Associated Press)