অস্কার জয়ী ছবি ‘ফ্লো’: টিকে থাকার গল্প
ছোট্ট একটি দল, সামান্য বাজেট, আর অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়া – এই নিয়েই তৈরি হয়েছে লাটভিয়ার অ্যানিমেশন ছবি ‘ফ্লো’। সম্প্রতি সেরা অ্যানিমেটেড ফিচার ফিল্ম হিসেবে অস্কার জিতে নিয়েছে ছবিটি।
গল্পটি একটি বিড়ালকে কেন্দ্র করে, যে এক ভয়াবহ বন্যায় অন্য কিছু প্রাণীর সঙ্গে মিলে টিকে থাকার লড়াইয়ে নামে।
ছবিটির মূল আকর্ষণ এর গল্প বলার ধরন। কোনো সংলাপ ছাড়াই, ছবিতে পশুপাখিদের জীবনযাত্রা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। প্রকৃতির প্রতিশোধ, প্রতিকূলতা এবং দলবদ্ধভাবে বাঁচার গুরুত্ব – এই বিষয়গুলো ছবিতে খুবই সুন্দরভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
বিড়ালটির একাকী জীবন হঠাৎ করেই বদলে যায় যখন বন্যা আসে। এরপর সে একটি ক্যাপিবারা, একটি লেমুর, একটি সেক্রেটারি বার্ড এবং একটি কুকুরের সঙ্গে একটি নৌকায় আশ্রয় নেয়। তাদের এই যাত্রা শুধু একটি দুর্যোগ থেকে বাঁচার লড়াই নয়, বরং পারস্পরিক সহযোগিতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
ছবিটির পরিচালক গিন্টস জিলবালোডিস, যিনি তাঁর কাজের মাধ্যমে দেখিয়েছেন, সীমিত সম্পদ এবং সুযোগের মধ্যেও অসাধারণ কিছু তৈরি করা সম্ভব। তিনি তাঁর ছবিতে পশু-পাখিদের নিজস্ব বৈশিষ্ট্যগুলো অক্ষুণ্ণ রেখেছেন। তাদের আচরণ এবং অভিব্যক্তি এতটাই স্বাভাবিক যে, দর্শক খুব সহজেই ছবিটির সঙ্গে নিজেদের সংযোগ স্থাপন করতে পারে।
পরিবেশ বিপর্যয় এবং জলবায়ু পরিবর্তনের এই যুগে, ‘ফ্লো’-এর গল্প আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ছবিটি একদিকে যেমন প্রকৃতির ধ্বংসলীলার কথা বলে, তেমনি দুর্যোগের সময় কিভাবে মানুষ ও জীবজন্তুরা একসাথে বাঁচতে পারে, সে কথাও তুলে ধরে।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যদি এর কথা বলি, তাহলে দেখা যায়, আমাদের দেশে প্রায়ই বন্যা, ঘূর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসে। এই ধরনের পরিস্থিতিতে টিকে থাকতে হলে প্রয়োজন হয় দলবদ্ধ প্রচেষ্টা এবং একে অপরের প্রতি সহযোগিতা। ‘ফ্লো’ সেই শিক্ষাই দেয়।
সবশেষে, ‘ফ্লো’ একটি অসাধারণ সৃষ্টি। এটি শুধু একটি অ্যানিমেশন ছবি নয়, বরং জীবনের কঠিন বাস্তবতাকে সহজভাবে দেখার একটি সুন্দর দৃষ্টান্ত। যারা এখনো ছবিটি দেখেননি, তাঁদের জন্য এটি একটি দারুণ অভিজ্ঞতা হতে পারে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান