ফোর্ড গাড়ির ‘কর্মচারী মূল্য’ অফার বাড়ালেন সিইও, গ্রীষ্মে কি বাড়বে দাম?
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে গাড়ি কেনাবেচার ক্ষেত্রে অস্থিরতা চলছে। আমদানিকৃত গাড়ির ওপর নতুন শুল্ক আরোপের কারণে দাম বাড়ার আশঙ্কায় ভুগছেন ক্রেতারা। এমন পরিস্থিতিতে, ফোর্ড মোটর কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জিম ফ্যান্সি গ্রাহকদের জন্য ‘কর্মচারী মূল্য’ অফারটি জুলাই মাসের ৪ তারিখ পর্যন্ত বাড়িয়েছেন।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি এমনটাই জানিয়েছেন।
ফোর্ড সিইও’র মতে, এই অফারটি মূলত ক্রেতাদের মধ্যে আস্থা ফেরাতে সাহায্য করবে। একইসাথে, তিনি এও জানিয়েছেন যে, অফার শেষ হওয়ার পরে গাড়ির দাম বাড়বে কিনা, তা এখনই বলা যাচ্ছে না।
কারণ, অন্যান্য প্রতিযোগী কোম্পানিগুলোর মূল্যের উপর অনেক কিছু নির্ভর করবে। ফোর্ড অন্যান্য অনেক গাড়ি প্রস্তুতকারক কোম্পানির চেয়ে বেশি গাড়ি তৈরি করে থাকে যুক্তরাষ্ট্রে।
ফ্যান্সি বলেন, “আমরা আমাদের গাড়ির দাম প্রতিযোগিতামূলক এবং কম রাখতে চাই। আমাদের জন্য এটি একটি সুযোগ। শুল্কের ক্ষেত্রে আমাদের অবস্থান অন্যদের থেকে ভিন্ন।”
জানা গেছে, গাড়ির যন্ত্রাংশ এবং গাড়ির ওপর ২৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের কারণে বিশ্বজুড়ে এই শিল্পের চিত্র বদলে গেছে। এই শুল্কের কারণে উৎপাদকদের খরচ বাড়বে, যা পরবর্তীতে গাড়ির দামে প্রভাব ফেলবে।
ফলে, গ্রীষ্মকালে গাড়ির দাম বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রি হওয়া প্রায় ৪৬ শতাংশ গাড়ি এসেছে বিভিন্ন দেশ থেকে। এর মধ্যে মেক্সিকো থেকে সবচেয়ে বেশি গাড়ি আসে, যা প্রায় ২৫ লাখ।
যদিও বর্তমানে শুল্ক আরোপের আগে আমদানি করা গাড়ি পাওয়া যাচ্ছে, তবে খুব শীঘ্রই এই মজুত ফুরিয়ে যাবে। এমনকি, যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি হওয়া গাড়ির যন্ত্রাংশের ক্ষেত্রেও শুল্ক দিতে হতে পারে।
ফোর্ড সিইও জানান, “আমাদের কিছু যন্ত্রাংশ আমদানি করতে হয়। আমরা চাইলেও সেগুলো এখানেই কিনতে পারি না।”
আর্ন্তজাতিক গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মঙ্গলবার অটো যন্ত্রাংশের ওপর শুল্ক কমানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন।
তবে, যদি কোনো গাড়ির ১৫ শতাংশের বেশি যন্ত্রাংশ বিদেশি সরবরাহকারীদের কাছ থেকে আসে, তবে সেই গাড়িগুলোর ক্ষেত্রে শুল্ক দিতে হবে।
ফ্যান্সি আরও বলেন, “আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করছি দেশের জন্য সঠিক কাজটি করতে। এতে কিছুটা সময় লাগবে।”
ফোর্ডের এই ‘কর্মচারী মূল্য’ অফারটি ‘ফ্রম আমেরিকা, ফর আমেরিকা’ ক্যাম্পেইনের একটি অংশ। এর মাধ্যমে ফোর্ড প্রমাণ করতে চাইছে যে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত এবং উৎপাদন ব্যবস্থায় দেশটির প্রতি তাদের অঙ্গীকার রয়েছে।
গাড়ি প্রস্তুতকারকদের বিষয়ে ট্রাম্পের বক্তব্য ছিল, তারা নাকি শুল্কের কারণে নতুন কারখানা তৈরি করতে আগ্রহী হচ্ছেন। যদিও, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নতুন কারখানা তৈরি করতে অথবা আগে বন্ধ হয়ে যাওয়া কোনো কারখানা পুনরায় চালু করতে কয়েক বছর সময় লাগবে।
এই পরিস্থিতিতে, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বিষয়টি বিবেচনা করলে, বিশ্ব অর্থনীতির এই পরিবর্তন দেশের আমদানি-রপ্তানি এবং গাড়ির বাজারের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।
বিশেষ করে, উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের ওপর উন্নত দেশগুলোর বাণিজ্য নীতির প্রভাব অনেক বেশি। এক্ষেত্রে, শুল্ক বৃদ্ধির ফলে গাড়ির দাম বাড়লে, তা সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতাকে প্রভাবিত করবে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন