ফোর্ড: মেক্সিকোতে তৈরি গাড়ির দাম বাড়াচ্ছে, মাথায় হাত ক্রেতাদের!

আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নীতিমালার কারণে বিশ্বজুড়ে গাড়ির বাজারে অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে। সম্প্রতি, ফোর্ড মোটর কোম্পানি ঘোষণা করেছে যে তারা মেক্সিকোতে উৎপাদিত তিনটি গাড়ির দাম বাড়াতে বাধ্য হচ্ছে।

এই সিদ্ধান্তের পেছনে মূল কারণ হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য শুল্ক, যা বিভিন্ন দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক লেনদেনের খরচ বাড়িয়ে দিয়েছে। এই পদক্ষেপের ফলে বিশ্ব অর্থনীতির ওপর এর প্রভাব আরও স্পষ্ট হচ্ছে।

ফোর্ডের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই দাম বৃদ্ধির ফলে তাদের জনপ্রিয় মডেল Mustang Mach-E, Maverick এবং Bronco Sport-এর কিছু সংস্করণের দাম প্রায় ২,০০০ মার্কিন ডলার পর্যন্ত বাড়তে পারে। খবর অনুযায়ী, নতুন দাম ২রা মে বা তার পরে তৈরি হওয়া গাড়িগুলোর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।

ধারণা করা হচ্ছে, এই দাম বাড়ানো গাড়িগুলো জুন মাসের শেষ নাগাদ ডিলারদের কাছে পৌঁছাবে।

বাণিজ্য শুল্কের কারণে ফোর্ড ২০২৫ সাল নাগাদ প্রায় ২.৫ বিলিয়ন ডলার অতিরিক্ত খরচ হওয়ার আশঙ্কা করছে। তবে তারা প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার খরচ কমানোর পরিকল্পনা করছে।

শুধু ফোর্ডই নয়, জেনারেল মোটরস (জিএম)-এর মতো অন্যান্য বৃহৎ গাড়ি প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলোও এই শুল্কের কারণে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। জিএম-এর হিসাব অনুযায়ী, এই শুল্ক তাদের প্রায় ৪ থেকে ৫ বিলিয়ন ডলার ক্ষতি করবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই শুল্কের কারণে শুধু গাড়ি প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলোই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে না, বরং এর প্রভাব ভোক্তাদের ওপরও পড়ছে। কারণ, গাড়ির দাম বাড়লে তা সরাসরি ক্রেতাদের পকেটকে প্রভাবিত করবে।

এই পরিস্থিতিতে অনেক গাড়ি প্রস্তুতকারক কোম্পানি তাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য হচ্ছে। কিছু কোম্পানি উৎপাদন কমাচ্ছে, আবার কেউ কেউ তাদের কারখানার কার্যক্রম বন্ধ করে দিচ্ছে।

তবে, সব কোম্পানির পরিস্থিতি এক রকম নয়। ফোর্ড এর উৎপাদন ব্যবস্থা আমেরিকার অভ্যন্তরে বেশি হওয়ায় এই শুল্কের প্রভাব কিছুটা কম হবে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, তারা যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদিত গাড়ির ওপর বেশি নির্ভরশীল।

অন্যদিকে, জিএম-এর মতো কোম্পানিগুলোকে চীন এবং দক্ষিণ কোরিয়া থেকে আমদানি করা যন্ত্রাংশের ওপর শুল্ক দিতে হচ্ছে, যা তাদের খরচ আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।

এই পরিস্থিতিতে, অন্যান্য গাড়ি প্রস্তুতকারক যেমন পোরশে এবং ভক্সওয়াগেন-এর অডি ব্র্যান্ডও দাম বাড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছে। তবে, বিএমডব্লিউ-এর ধারণা, তারা সম্ভবত মার্কিন শুল্ক থেকে জুলাই মাস থেকে কিছুটা রেহাই পেতে পারে।

এই পরিস্থিতিতে, বাজার বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বাণিজ্য শুল্কের কারণে গাড়ির বাজারে অস্থিরতা আরও কয়েক মাস ধরে চলতে পারে।

যদিও এই মুহূর্তে বাংলাদেশের গাড়ি বাজারের ওপর এর সরাসরি প্রভাব সম্পর্কে নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না, তবে বিশ্ব অর্থনীতির এই পরিবর্তনের ফলে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের বাজারেও গাড়ির দামে পরিবর্তন আসতে পারে।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *