যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আইনজীবী এমিল বোভের ফেডারেল বিচারক পদে মনোনয়ন নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। দেশটির বিচার বিভাগের সাবেক ও বর্তমান ৭৫ জনেরও বেশি বিচারক সিনেট জুডিশিয়ারি কমিটিকে বোভের মনোনয়ন প্রত্যাখ্যান করার আহ্বান জানিয়েছেন।
তাদের মতে, বোভের অতীত কর্মকাণ্ড, বিশেষ করে আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং আইনের প্রতি অবজ্ঞা করার অভিযোগ রয়েছে, যা তাকে এই গুরুত্বপূর্ণ পদের জন্য অযোগ্য করে তোলে।
বিচারকদের উদ্বেগের কারণ হিসেবে উঠে এসেছে, ৬ জানুয়ারির বিদ্রোহের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত এবং নিউ ইয়র্ক সিটির মেয়র এরিক অ্যাডামসের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রত্যাহার করার মতো বিষয়গুলো।
অভিযোগ রয়েছে, ট্রাম্পের অভিবাসন নীতি বাস্তবায়নের জন্য বোভে আদালতের নির্দেশ অমান্য করার ষড়যন্ত্র করেছিলেন। একজন হুইসেলব্লোয়ারের মাধ্যমে এই তথ্য জানা গেছে, যিনি সিনেট কমিটিকে বিস্তারিত তথ্য দিতে প্রস্তুত।
সিনেটে বোভের মনোনয়ন অনুমোদিত হলে তিনি পেনসিলভানিয়া, নিউ জার্সি, ডেলাওয়্যার এবং ভার্জিন আইল্যান্ডসের ফেডারেল মামলার আপিল শুনানির ক্ষমতা পাবেন। যদিও বোভে তার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন, তবে সিনেটরদের মধ্যে তার মনোনয়ন নিয়ে গভীর পর্যালোচনা চলছে।
এই মনোনয়ন নিয়ে বিতর্ক আরও তীব্র হয়েছে কারণ, ট্রাম্প এই প্রথম তার কোনো আইনজীবীকে বিচারক পদে নিয়োগ দিতে যাচ্ছেন। সমালোচকরা বলছেন, এটি বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা এবং রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিতে পারে।
বিচারকদের মতে, কোনো প্রেসিডেন্ট কর্তৃক তার ব্যক্তিগত আইনজীবীকে বিচারক পদে নিয়োগ দেওয়াটা “গভীরভাবে অনুপযুক্ত”।
সিনেট জুডিশিয়ারি কমিটির একজন প্রভাবশালী রিপাবলিকান সিনেটর, যিনি আগে ট্রাম্পের মনোনীত প্রার্থীর বিরোধিতা করেছিলেন, তিনি বলেছেন যে বোভের মনোনয়নের বিষয়ে তিনি এখনো সিদ্ধান্ত নেননি।
আগামী বৃহস্পতিবার এই বিষয়ে ভোট হওয়ার কথা রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের উচ্চ পদে এমন বিতর্কিত মনোনয়ন বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং স্বচ্ছতা রক্ষার গুরুত্বকে নতুন করে সামনে নিয়ে এসেছে।
বিচার বিভাগের স্বাধীনতা যেকোনো গণতান্ত্রিক দেশের জন্য অপরিহার্য, এবং এর ওপর রাজনৈতিক প্রভাবের সম্ভাবনা উদ্বেগজনক।
তথ্য সূত্র: সিএনএন