আইন পেশা ছেড়ে ভালোবাসার সন্ধানে, এক মার্কিন আইনজীবীর নতুন দিগন্ত।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক খ্যাতনামা আইনজীবী, যিনি ১৫ বছর ধরে আইন পেশার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, সম্প্রতি নিজের কর্মজীবনে এক উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এনেছেন।
তিনি পেশা পরিবর্তন করে ভালোবাসার সন্ধানে মানুষকে সাহায্য করার উদ্দেশ্যে একটি ম্যাচমেকিং সংস্থা গড়ে তুলেছেন।
নিউ অরলিন্সের প্রাক্তন সহকারী জেলা অ্যাটর্নি, অ্যান পার্নেস, ভালোবাসার জগৎকে নতুন দৃষ্টিতে দেখছেন এবং মানুষের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে চান।
আগে, পার্নেস ১৫ বছর ধরে আইনজীবী হিসেবে কাজ করেছেন, যার মধ্যে ৮ বছর তিনি নিউ অরলিন্সের সহকারী জেলা অ্যাটর্নি ও প্রসিকিউটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
তিনি জানান, প্রথমে অন্যদের সাহায্য করার উদ্দেশ্যে এই পেশায় এসেছিলেন।
কিন্তু এক দশকের বেশি সময় পর তিনি অনুভব করেন, অন্যভাবেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলা সম্ভব।
এরপরই তিনি তার নতুন পথ বেছে নেন এবং ২০১৭ সালে ‘আফটারহ্যালো’ নামে একটি ম্যাচমেকিং সংস্থা শুরু করেন।
আফটারহ্যালো: ভালোবাসার পথপ্রদর্শক।
২০২৩ সালে পার্নেস তার বর্তমান ব্যবসায়িক সহযোগী খুঁজে পান এবং তার সঙ্গে মিলে জাতীয় পর্যায়ে ম্যাচমেকিং পরিষেবা শুরু করেন।
এই সংস্থার মাধ্যমে ভালোবাসার মানুষ খুঁজে পেতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের জন্য একটি বিস্তারিত প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়।
পার্নেস এবং তার দল তাদের ক্লায়েন্টদের প্রত্যাশা এবং প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানার পর, উপযুক্ত সঙ্গীর সন্ধান শুরু করেন।
পার্নেস মনে করেন, বর্তমান সময়ে ভালোবাসার সম্পর্কে সফল হতে হলে কিছু বিষয় মনে রাখা জরুরি।
তিনি জানান, খোলা মন নিয়ে সম্পর্কের দিকে এগোনো এবং সম্পর্কের প্রতি মনোযোগী হওয়াটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি আরও যোগ করেন, মানুষের মধ্যে যদি ‘আমরা একসঙ্গে এটি খুঁজে বের করব’ – এই মানসিকতা থাকে, তবে তা সম্পর্কের জন্য ভালো।
সময় ও বিশ্বাসের গুরুত্ব।
বর্তমান যুগে দ্রুততার সঙ্গে সবকিছু পাওয়ার প্রবণতা দেখা যায়, কিন্তু গভীর সম্পর্ক তৈরি করতে সময়ের প্রয়োজন।
পার্নেস তার ক্লায়েন্টদের এই প্রক্রিয়াটির ওপর আস্থা রাখতে উৎসাহিত করেন।
তিনি মনে করেন, ভালোবাসার সম্পর্ক ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে এবং প্রথম দর্শনে পাওয়া তীব্র আকর্ষণ অনেক সময় ভুল সংকেত দিতে পারে।
আসল এবং দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিকশিত হয়।
ম্যাচমেকিং প্রক্রিয়ার বিস্তারিত।
একজন ম্যাচমেকারের সঙ্গে কাজ শুরু করার প্রথম ধাপ হলো একটি বিস্তারিত আলোচনা।
এখানে ক্লায়েন্টদের প্রয়োজন, অপছন্দ এবং নৈতিক বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়।
এরপর, তাদের জীবনসঙ্গী নির্বাচনের ক্ষেত্রে কী ধরনের বৈশিষ্ট্যগুলো তারা চান, সে বিষয়ে ধারণা নেওয়া হয়।
এই আলোচনার ভিত্তিতে ডেটাবেস থেকে উপযুক্ত প্রোফাইল খুঁজে বের করা হয়।
পার্নেস জানান, তারা শুধু ডেটাবেসের ওপর নির্ভর করেন না।
উপযুক্ত জীবনসঙ্গী খুঁজে বের করার জন্য তারা লিংকডইন, সোশ্যাল মিডিয়া এবং ব্যক্তিগত পরিচিতি ব্যবহার করেন।
সম্ভাব্য সঙ্গীর সঙ্গে কথা বলার পর, যদি মনে হয় তাদের মধ্যে মিল রয়েছে, তবে ক্লায়েন্টদের সঙ্গে তাদের পরিচয় করানো হয়।
প্রথম ডেটের পরে, পার্নেস তার ক্লায়েন্ট এবং সম্ভাব্য সঙ্গীর কাছ থেকে মতামত নেন।
এর মাধ্যমে তারা বুঝতে পারেন, কোথায় আরও উন্নতি প্রয়োজন এবং সম্পর্কের ক্ষেত্রে ক্লায়েন্টদের কোনো দুর্বলতা আছে কিনা।
এই প্রক্রিয়াটি প্রায় ছয় মাস ধরে চলতে থাকে।
বর্তমানে, অনেক মানুষ ডেটিং অ্যাপের পরিবর্তে ব্যক্তিগত এবং নির্ভরযোগ্য ম্যাচমেকিং পরিষেবা পছন্দ করেন।
পার্নেস তাদের জন্য পরামর্শ দেন, স্থানীয় ম্যাচমেকারের ডেটাবেসে নাম লেখানো যেতে পারে।
তথ্য সূত্র: পিপল।