যুদ্ধ নিয়ে ফক্স নিউজের আগ্রাসী অবস্থান, বিভক্ত ট্রাম্পের মিডিয়া জগৎ!

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ইরান-ইসরায়েল সংকট: মিডিয়া বিভাজন ও ট্রাম্পের অবস্থান।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী গণমাধ্যমগুলোতে বর্তমানে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংকট নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন মত দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থক মহলে এই বিভেদ তীব্র আকার ধারণ করেছে।

ফক্স নিউজের মতো রক্ষণশীল মিডিয়াগুলোতে একদিকে যেমন ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন দেখা যাচ্ছে, তেমনি দেশটির অভ্যন্তরীণ কিছু সংবাদ মাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে।

মার্কিন গণমাধ্যম বিশ্লেষকদের মতে, এই বিতর্কের মূল কারণ হলো ইরানের সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্ক এবং এর মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা কেমন হবে, তা নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি। রক্ষণশীল ধারা সাধারণত ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন জানালেও, অনেক ক্ষেত্রে তারা যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করছে।

উদাহরণস্বরূপ, জনপ্রিয় রেডিও ব্যক্তিত্ব মার্ক লেভিন ফক্স নিউজে সরাসরি ইরানকে রুখতে সামরিক পদক্ষেপের পক্ষে মত দিয়েছেন। তিনি এটিকে ‘ভালো বনাম মন্দের’ লড়াই হিসেবে বর্ণনা করেছেন এবং যারা সরাসরি হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করছেন, তাদের দেশপ্রেম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

অন্যদিকে, সাবেক ফক্স নিউজ উপস্থাপক টাকার কার্লসন সহ আরও অনেকে যুক্তরাষ্ট্রের এই সংঘাতে জড়িত হওয়ার বিরোধিতা করছেন। তাদের মতে, এতে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো লাভ নেই এবং এটি কেবল আরেকটি যুদ্ধ ডেকে আনবে।

কার্লসন সরাসরি ট্রাম্পকে ইসরায়েলের পক্ষ ত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছেন। এই ভিন্নমতগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং বিভিন্ন পডকাস্টেও বেশ আলোচিত হচ্ছে।

এই বিতর্কের কেন্দ্রে রয়েছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মিডিয়া বিশ্লেষকদের ধারণা, ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে এই বিভাজন একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।

ফক্স নিউজের অনুষ্ঠানে ট্রাম্পের প্রতি সমর্থন জানানো এবং ইরানের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে। ট্রাম্প নিজেও বিভিন্ন সময়ে তার ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির কথা উল্লেখ করেছেন এবং বলেছেন, এই নীতির ব্যাখ্যা তিনিই দেবেন।

এই বিতর্কের কারণে ‘ম্যাগা’ (MAGA – Make America Great Again) মিডিয়া জগতে বিভেদ আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। কেউ কেউ ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন জানালেও, গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের সমালোচনা করে অনেকে ভিন্ন মত পোষণ করছেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই বিভাজন শুধু একটি দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নয়, বরং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এবং বিশ্ব রাজনীতির ওপরও এর গভীর প্রভাব ফেলতে পারে।

বর্তমানে, ফক্স নিউজসহ বেশ কিছু গণমাধ্যমে এই বিতর্ক বেশ গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে। তবে, এর প্রভাব ট্রাম্প প্রশাসনের ভবিষ্যৎ নীতি নির্ধারণে কেমন হবে, সেটি এখনো স্পষ্ট নয়।

তথ্যসূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *