ফ্রান্স-চীনের শক্তিশালী জোট: যুদ্ধের আবহে নতুন বার্তা!

**ফ্রান্স ও চীনের মধ্যে কৌশলগত সম্পর্ক জোরদারের আহ্বান, ইউক্রেন যুদ্ধ এবং বাণিজ্য নিয়ে আলোচনা**

ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যাঁ-নোয়েল বারোট বেইজিং সফরে গিয়ে চীন ও ফ্রান্সের মধ্যে ‘শক্তিশালী অংশীদারিত্বের’ উপর জোর দিয়েছেন। তাঁর এই সফরের মূল উদ্দেশ্য ছিল ইউক্রেন যুদ্ধ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)-এর সঙ্গে চীনের বাণিজ্য বিরোধ এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করা।

বেইজিংয়ে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই-র সঙ্গে বৈঠকের পর বারোট এই মন্তব্য করেন।

বারোটের এই সফর এমন একটা সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যখন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এবং বাণিজ্যনীতিতে অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির কারণে বিশ্বজুড়ে ভূ-রাজনৈতিক পরিবর্তন এসেছে।

বারোট বেইজিং-এর একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতাকালে বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতিতে স্থিতিশীলতা, সমৃদ্ধি এবং আমাদের গ্রহের ভবিষ্যতের জন্য ফ্রান্স ও চীনের মধ্যে শক্তিশালী অংশীদারিত্ব খুবই জরুরি।

আলোচনায় ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটও গুরুত্বপূর্ণ ছিল। জানা গেছে, ফ্রান্স চাইছে রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে আনতে চীন যেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

বারোট বলেন, “ইউক্রেনে একটি ন্যায় ও স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় ফ্রান্স ও চীনকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে বসাতে চীন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের মধ্যে ইউক্রেনকে সমর্থন করা নিয়ে কিছুটা মতানৈক্য দেখা যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে ফ্রান্সের এই পদক্ষেপ বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ।

এর আগে, ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ প্রস্তাব করেছিলেন, ইউরোপীয় সশস্ত্র বাহিনী ইউক্রেনে মোতায়েন করা যেতে পারে, যদি শান্তি চুক্তি হয়।

আলোচনায় চীন ও ইইউ-এর মধ্যে চলা বাণিজ্য বিরোধের বিষয়টিও উঠে আসে। বিশেষ করে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন চীনের বৈদ্যুতিক গাড়ির ওপর শুল্ক আরোপের পর চীনও ফরাসি ব্র্যান্ডি-র ওপর শুল্ক বাড়িয়েছে।

এর ফলে ফরাসি ব্র্যান্ডি রপ্তানিতে প্রায় এক-চতুর্থাংশ পতন হয়েছে। বারোট বাণিজ্য যুদ্ধের বিরোধিতা করে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের কথা বলেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রী ওয়াং ই-র সঙ্গে বৈঠকের পর বারোট জানান, আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এবং চীন-ইইউ সম্পর্ক নিয়েও আলোচনা হয়েছে।

শুক্রবার, বারোট সাংহাইয়ে স্থানীয় কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করেন।

বারোটের এই চীন সফর ইউক্রেন পরিস্থিতি নিয়ে ফ্রান্সের আসন্ন বৈঠকের আগে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

এই বৈঠকের মাধ্যমে ইউক্রেনে সম্ভাব্য শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানো নিয়ে আলোচনা হতে পারে।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *