ফরাসি কোচিংয়ের সোনালী যুগ কি শেষ? দেশমের পর কে?

ফরাসি ফুটবলে সোনালী দিন কি শেষ হতে চলেছে?

ইউরোপীয় ফুটবলে একসময় ফরাসি কোচদের দারুণ কদর ছিল। আর্সেন ওয়েঙ্গার, জেরার্ড হুলিয়ারের মতো কোচের হাত ধরে অনেক ফরাসি ম্যানেজার বিশ্বের সেরা ক্লাবগুলোতে কাজ করার সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু সেই দিন কি সত্যিই শেষ হয়ে যাচ্ছে?

বর্তমানে শীর্ষস্থানীয় লিগগুলোতে ফরাসি কোচের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে, যা ফুটবল বিশ্বে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।

বর্তমানে, ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ, স্প্যানিশ লা লিগা, ইতালিয়ান সিরি এ এবং জার্মান বুন্দেসলিগায় হাতে গোনা কয়েকজন ফরাসি কোচ কাজ করছেন। এমনকি ফ্রান্সের ঘরোয়া লিগ, লিগ ওয়ানেও এখন ফরাসি কোচের সংখ্যা কমছে।

ফুটবল বোদ্ধাদের মতে, এর কারণ হতে পারে ভাষার সমস্যা। ফরাসি কোচদের অন্য দেশের ভাষা ভালোভাবে না জানার কারণে তারা ভালো সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ফ্রান্সের কোচিং ঐতিহ্য এবং তরুণ খেলোয়াড়দের গড়ে তোলার দক্ষতার সুনাম থাকলেও, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তাদের প্রভাব কমে যাচ্ছে।

বর্তমানে ফরাসি জাতীয় দলের কোচের দায়িত্বে রয়েছেন দিদিয়ের দেশম। ২০২৬ বিশ্বকাপের পর তিনি এই পদ থেকে সরে দাঁড়াবেন বলে জানা গেছে। এরপর কে এই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব নেবেন, তা নিয়ে চলছে জল্পনা-কল্পনা।

জিনেদিন জিদানকে তার সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে দেখা হচ্ছে। তবে এখনো পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনো নিশ্চিত খবর পাওয়া যায়নি।

ফরাসি কোচদের এই পিছিয়ে পড়ার পেছনে আরও কিছু কারণ রয়েছে। অনেকের মতে, পর্যাপ্ত নেটওয়ার্কের অভাব এবং ভালো এজেন্টের অনুপস্থিতিও এর জন্য দায়ী। বর্তমানে ফরাসি কোচরা সাধারণত তাদের পরিচিত দেশগুলোতে, বিশেষ করে আফ্রিকা মহাদেশে কাজ করতে বেশি আগ্রহী।

একসময় আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের জাতীয় দলের কোচ হিসেবে ফরাসিদের বেশ কদর ছিল, কিন্তু সেই ধারাতেও ভাটা পড়েছে।

পরিসংখ্যান বলছে, পরিস্থিতি বেশ উদ্বেগজনক। উদাহরণস্বরূপ, ইতালির শীর্ষ আটটি ক্লাবের সবকটিতেই ইতালীয় কোচ রয়েছেন। অথচ, ফ্রান্সে এই চিত্রটা ভিন্ন।

সম্প্রতি, লিগ ওয়ানের ১৮টি ক্লাবের মধ্যে ফরাসি কোচের সংখ্যা অর্ধেকেরও কম, যা ইতালির তুলনায় অনেক কম।

ফরাসি ফুটবলের এই সংকটকালে, দেশটির ফুটবল ফেডারেশনকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। তরুণ ফরাসি কোচদের জন্য আরও বেশি সুযোগ তৈরি করতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তাদের পরিচিতি বাড়ানোর চেষ্টা করতে হবে।

তা না হলে, ফরাসি ফুটবলের সোনালী অতীত হয়তো শুধুই স্মৃতি হয়ে থাকবে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *