ডেভিল’স আইল্যান্ড-এর কাছে ফ্রান্সের নতুন জেল, আতঙ্কে কেন?

ফরাসি গায়ানায় কুখ্যাত ডেভিলস আইল্যান্ডের কাছে একটি অত্যাধুনিক কারাগার নির্মাণের পরিকল্পনা করছে ফ্রান্স। এই কারাগারটি তৈরি করা হবে সেন্ট-লরেন্ট-দু-মারোনি অঞ্চলে, যা সুরিনামের সীমান্তবর্তী এলাকা।

ফরাসি বিচারমন্ত্রী জেরাল্ড ডারমানিন সম্প্রতি ফরাসি গায়ানা পরিদর্শনে গিয়ে এই তথ্য জানান।

নতুন এই কারাগারে মাদক পাচারকারী এবং জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে জড়িত চরমপন্থীদের রাখা হবে।

জানা গেছে, কারাগারটিতে প্রায় ৫০০ জন বন্দী থাকতে পারবে, যাদের মধ্যে ৬০ জন অতি-সুরক্ষার বন্দী থাকবেন।

মন্ত্রী ডারমানিন সাংবাদিকদের জানান, এই পদক্ষেপের মূল উদ্দেশ্য হলো ফরাসি গায়ানায় কারাগারের অতিরিক্ত চাপ কমানো এবং এই অঞ্চলে মাদক ব্যবসার বিস্তার রোধ করা।

ফরাসি গায়ানা মূলত দক্ষিণ আমেরিকা থেকে ইউরোপে মাদক পাচারের একটি গুরুত্বপূর্ণ পথ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

ফরাসি কর্তৃপক্ষের মতে, এখানকার অপরাধমূলক চক্রগুলোর মধ্যে প্রায়ই সংঘর্ষ বাধে, যার ফলস্বরূপ এই অঞ্চলে প্রতি ১ লাখে ১৮.৪ জন খুন হন।

যেখানে ফ্রান্সের মূল ভূখণ্ডে এই সংখ্যাটা ১.২ জন।

মন্ত্রী ডারমানিন আরও বলেন, “ফ্রান্সের মূল ভূখণ্ডের নাগরিকদের মতো, এখানকার মানুষেরও নিরাপত্তা পাওয়ার অধিকার রয়েছে।”

এই নতুন কারাগারে একটি আদালতও স্থাপন করা হবে এবং এর নির্মাণে প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ইউরো (বাংলাদেশি মুদ্রায় আনুমানিক ৪,৮০০ কোটি টাকার বেশি) খরচ হবে।

উল্লেখ্য, ডেভিলস আইল্যান্ড একসময় কুখ্যাত একটি বন্দীশালা ছিল, যা ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত চালু ছিল।

কারাবন্দীদের উপর অমানবিক আচরণের জন্য জায়গাটি পরিচিত ছিল। এমনকি এই দ্বীপের ঘটনা নিয়ে ‘পাপিলন’ (Papillon) নামে একটি সিনেমাও তৈরি হয়েছিল।

ফরাসি কর্তৃপক্ষের ধারণা, উচ্চপদস্থ অপরাধীরা তাদের অবৈধ উপার্জনের মাধ্যমে কর্মকর্তাদের প্রভাবিত করে এবং কারাগারের ভেতর থেকেও তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে।

বর্তমানে, ফরাসি গায়ানা এবং অন্যান্য ফরাসি অঞ্চলের কারাগারে ৪৯ জন শীর্ষ মাদক পাচারকারী বন্দী রয়েছেন।

কর্তৃপক্ষ মনে করে, এই ‘চরম বিপজ্জনক’ বন্দীদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থায় রাখা হচ্ছে না।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *