ফ্রান্সের স্কুলগুলোতে মোবাইল ফোন ব্যবহারের উপর কঠোর হচ্ছে নিষেধাজ্ঞা, শিক্ষার্থীদের সুরক্ষাই মূল লক্ষ্য।
ফ্রান্সে কিশোর বয়সী শিক্ষার্থীদের মোবাইল ফোন ব্যবহারের উপর কড়াকড়ি আরোপ করতে যাচ্ছে দেশটির সরকার। নতুন এই নিয়মানুসারে, ১১ থেকে ১৫ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের স্কুলে আসার পর মোবাইল ফোন হয়তো একটি নির্দিষ্ট স্থানে জমা রাখতে হবে, নতুবা বিশেষ একটি খাপে ভরে রাখতে হবে। স্কুল ছুটির পরই তারা ফোনগুলো ফেরত পাবে।
ফরাসি শিক্ষামন্ত্রী এলিজাবেথ বোর্ন মনে করেন, এই পদক্ষেপ শিক্ষার্থীদের সুস্থ জীবন এবং পড়াশোনার মান উন্নয়নে সহায়ক হবে। সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে ফ্রান্সের সকল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এটি কার্যকর করার কথা ভাবা হচ্ছে।
২০১৮ সাল থেকেই ফ্রান্সের স্কুলগুলোতে মোবাইল ফোন ব্যবহারের উপর নিষেধাজ্ঞা ছিল। তবে নতুন এই সিদ্ধান্তে, মোবাইল ফোন সম্পূর্ণরূপে শিক্ষার্থীদের থেকে আলাদা করার কথা বলা হয়েছে। এর আগে, ক্লাসরুমের বাইরে, এমনকি টিফিনের সময়েও কিছু শিক্ষার্থীকে ফোনে ভিডিও দেখতে দেখা যেত।
শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, পরীক্ষামূলকভাবে প্রায় একশটি স্কুলে এই ব্যবস্থা চালু করা হয়েছিল এবং এতে ইতিবাচক ফল পাওয়া গেছে। অভিভাবকদের মধ্যেও এই সিদ্ধান্তের প্রতি সমর্থন রয়েছে। এই পদ্ধতির ফলে, স্কুলের পরিবেশ উন্নত হয়েছে, পড়াশোনার প্রতি শিক্ষার্থীদের মনোযোগ বেড়েছে এবং সামাজিক সম্পর্কও বৃদ্ধি পেয়েছে।
এলিজাবেথ বোর্ন আরও উল্লেখ করেন, বর্তমানে একজন তরুণ দিনে গড়ে পাঁচ ঘণ্টা স্ক্রিনের সামনে কাটায়, যেখানে তারা সপ্তাহে মাত্র তিন ঘণ্টা বই পড়ে। তরুণ প্রজন্মের মধ্যে বই পড়ার প্রবণতা কমে যাওয়া নিঃসন্দেহে উদ্বেগের কারণ।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর পরামর্শে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ১৩ বছরের কম বয়সী শিশুদের স্মার্টফোন ব্যবহার করা উচিত না। এছাড়াও, তাদের টিকটক, ইনস্টাগ্রাম ও স্ন্যাপচ্যাটের মতো সামাজিক মাধ্যমগুলো ব্যবহারের ক্ষেত্রেও ১৮ বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করা উচিত।
ফ্রান্সের এই পদক্ষেপের সঙ্গে মিল রেখে, প্রতিবেশী দেশ ইংল্যান্ডেও স্কুলগুলোতে মোবাইল ফোন ব্যবহারের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ে আলোচনা চলছে। সেখানকার অনেক স্কুলেই ইতোমধ্যে বিভিন্ন ধরনের বিধিনিষেধ কার্যকর করা হয়েছে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান