এক সময়ের জনপ্রিয় ইংলিশ ক্রিকেটার এবং টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব ফ্রেডি ফ্লিনটফ, যিনি মাঠ ও পর্দার উজ্জ্বল নক্ষত্র ছিলেন, সম্প্রতি এক দুর্ঘটনার শিকার হয়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। ২০২৩ সালে মুক্তি পাওয়া ‘ফ্লিনটফ’ নামের একটি ডকুমেন্টারিতে তার জীবনের এই কঠিন অধ্যায় তুলে ধরা হয়েছে, যা দর্শকদের মনে গভীর রেখাপাত করেছে।
ডিজনি প্লাস-এ মুক্তি পাওয়া এই তথ্যচিত্রে ফ্লিনটফের জীবন এবং দুর্ঘটনার পরবর্তী অবস্থা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
২০২২ সালে ‘টপ গিয়ার’ নামক জনপ্রিয় গাড়ি বিষয়ক অনুষ্ঠানে একটি দুর্ঘটনার শিকার হন ফ্লিনটফ। এই দুর্ঘটনায় তিনি গুরুতর আহত হন।
ডকুমেন্টারিতে সেই দুর্ঘটনার ভয়াবহতা এবং তার শারীরিক ও মানসিক আঘাতের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। দুর্ঘটনার পর তার মুখ সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন।
ডকুমেন্টারিতে ফ্লিনটফকে হাসপাতালের বিছানায় দেখা যায়, যেখানে তিনি তার শারীরিক অবস্থার কথা বলছেন। ডাক্তাররা যখন তাকে সুস্থ হয়ে উঠছেন বলে আশ্বাস দিচ্ছিলেন, তখন তিনি যেন গভীর হতাশায় ছিলেন।
তিনি চেয়েছিলেন সবাই সত্যি কথা বলুক, তার বর্তমান অবস্থাটা কেমন, সেটাই জানতে চেয়েছিলেন তিনি।
ফ্লিনটফের খেলোয়াড়ি জীবনের সোনালী দিনগুলো ছিল খুবই উজ্জ্বল। তিনি ছিলেন একজন অসাধারণ ক্রিকেটার, যিনি তার অসাধারণ দক্ষতা, শারীরিক শক্তি এবং আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বের জন্য পরিচিত ছিলেন।
২০০৫ সালের অ্যাশেজ সিরিজে তার অনবদ্য পারফর্মেন্স আজও ক্রিকেট প্রেমীদের মনে গেঁথে আছে। তবে খ্যাতির আলো যেমন তার জীবনে এনেছিল, তেমনি ব্যক্তিগত জীবনেও অনেক ঝড় বয়ে গেছে।
অতিরিক্ত মদ্যপান এবং অন্যান্য কারণে তিনি সমালোচিতও হয়েছেন।
ডকুমেন্টারিতে ফ্লিনটফের মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরা হয়েছে। খ্যাতির চাপ, বুলিমিয়ার মতো মানসিক সমস্যা এবং দুর্ঘটনার কারণে হওয়া মানসিক আঘাত নিয়ে তিনি খোলামেলা কথা বলেছেন।
এমনকি ‘টপ গিয়ার’-এর সহ-উপস্থাপক, যাদের সঙ্গে তার গভীর সম্পর্ক ছিল, তাদের সঙ্গেও তার দূরত্ব তৈরি হয়েছে, যা হয়তো এই দুর্ঘটনার কারণে হয়েছে।
যদিও ডকুমেন্টারিটি ফ্লিনটফের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় তুলে ধরে, সমালোচকদের মতে, এর নির্মাণশৈলী কিছুটা দুর্বল ছিল। ঘটনার ধারাবাহিকতা বজায় না রেখে, বিভিন্ন সময়ের ঘটনা এলোমেলোভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
ফ্লিনটফের জীবনের গল্প আরও বিস্তারিতভাবে বলার সুযোগ ছিল, যা সম্ভবত এই ডকুমেন্টারিতে পুরোপুরিভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়নি।
ফ্লিনটফের জীবন সবসময়ই দর্শকদের কাছে আকর্ষণীয়। একজন ক্রিকেটার হিসেবে তার খ্যাতি, টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব হিসেবে জনপ্রিয়তা এবং দুর্ঘটনার পর তার ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা – সবকিছুই মানুষকে নাড়া দেয়।
‘ফ্লিনটফ’ ডকুমেন্টারিটি সেই গল্পগুলো আরও একবার সামনে নিয়ে এসেছে, যা দর্শকদের নতুন করে ভাবতে বাধ্য করে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান