মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে গিয়ে এক ফরাসি বিজ্ঞানীর বাধা পাওয়ার ঘটনা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। জানা গেছে, ওই বিজ্ঞানীর ফোনে ট্রাম্প প্রশাসনকে সমালোচনা করে লেখা কিছু বার্তা পাওয়ার পরেই যুক্তরাষ্ট্র সরকার এই সিদ্ধান্ত নেয়।
ফরাসি উচ্চ শিক্ষা ও গবেষণা মন্ত্রী ফিলিপ বাপতিস্ত’র বরাত দিয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এই খবর প্রকাশিত হয়েছে। বাপতিস্ত জানিয়েছেন, তিনি এই ঘটনায় উদ্বিগ্ন এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও গবেষণার অধিকারের পক্ষে তার সমর্থন অব্যাহত রাখবেন।
খবরে প্রকাশ, ফরাসি ন্যাশনাল সেন্টার ফর সাইন্টিফিক রিসার্চ (সিএনআরএস)-এর হয়ে কাজ করা ওই বিজ্ঞানী টেক্সাসের কাছাকাছি একটি সম্মেলনে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন। কিন্তু বিমানবন্দরে তার ফোন পরীক্ষা করার সময় অভিবাসন কর্মকর্তারা ট্রাম্প প্রশাসনের গবেষণা নীতি নিয়ে তার কিছু সমালোচনামূলক বার্তা খুঁজে পান। এর পরেই তাকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত পাঠানো হয়।
ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি’র একটি সূত্র জানিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছিল ৯ই মার্চ। অন্য একটি সূত্র জানায়, মার্কিন কর্তৃপক্ষ ওই বিজ্ঞানীর বিরুদ্ধে “ঘৃণাসূচক ও ষড়যন্ত্রমূলক বার্তা” দেওয়ার অভিযোগ এনেছিল। তাকে এফবিআই জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে হয়েছে এবং পরে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রত্যাহার করা হয়।
ফরাসি মন্ত্রী বাপতিস্ত এর আগে ট্রাম্প প্রশাসন এবং ইলন মাস্কের বিজ্ঞান গবেষণা খাতে বাজেট কমানোর সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছিলেন। ওই ঘটনার দিনই বাপতিস্ত এক চিঠিতে আমেরিকান গবেষকদের ফ্রান্সে চলে আসার আহ্বান জানান। তিনি লেখেন, “ইতিমধ্যেই অনেক খ্যাতনামা গবেষক যুক্তরাষ্ট্রে তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। আমরা তাদের স্বাগত জানাতে চাই।
পরের দিন, বাপতিস্ত মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষকের সঙ্গে ভার্চুয়াল মিটিংয়ের একটি ছবি পোস্ট করেন, যিনি এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে আইক্স-মার্সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দিতে রাজি হয়েছেন। ১২ই মার্চ বাপতিস্ত এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারের ভিডিও শেয়ার করেন, যেখানে তিনি স্বাস্থ্য, জলবায়ু, শক্তি এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিষয়ক গবেষণা “যুক্তরাষ্ট্রে ধ্বংস” হয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন।
ওই সাক্ষাৎকারে বাপতিস্ত আরও বলেন, “আমি শুনেছি এলন মাস্ক বলেছেন আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনটি ২০২৭ সালে বন্ধ করে দেওয়া উচিত। আমরা কার কথা বলছি? স্পেসএক্সের বস? নাকি আমেরিকান প্রশাসনের প্রধান? এর কোনো মানে হয় না।
যে সম্মেলনে যোগ দিতে ওই বিজ্ঞানী যাচ্ছিলেন, সেটি ছিল সম্ভবত ৫৬তম লুনার অ্যান্ড প্ল্যানেটারি সায়েন্স কনফারেন্স, যা ১০ থেকে ১৪ই মার্চ হিউস্টনের বাইরে অনুষ্ঠিত হয়। তবে ঠিক কোন সম্মেলনে তিনি যাচ্ছিলেন, সে বিষয়ে নিশ্চিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান