ফ্রান্সের একজন প্রাক্তন সার্জনের বিরুদ্ধে শিশুদের ওপর যৌন নির্যাতনের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে ২০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
ভ্যানেস শহরের একটি আদালতে বুধবার, ২৮শে মে, এই রায় ঘোষণা করা হয়। ৭৪ বছর বয়সী জোয়েল লে স্কোয়ারনেক নামের ওই সার্জন ১৯৮৯ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত প্রায় ৩০০ শিশুর ওপর যৌন নির্যাতন করেছেন।
বিচার চলাকালীন, অভিযুক্ত নিজের দোষ স্বীকার করেন এবং ভুক্তভোগীদের কাছে ক্ষমা চান। জানা গেছে, নির্যাতনের শিকার হওয়া শিশুদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন তার নিজের রোগী।
অনেক ক্ষেত্রে, শিশুদের অস্ত্রোপচার অথবা শরীর খারাপের সময় যখন তারা অচেতন থাকত, তখন এই ধরনের ঘটনা ঘটানো হতো।
আদালতে পেশ করা তথ্যে জানা যায়, অভিযুক্ত তার ডায়েরিতে নির্যাতনের প্রতিটি ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ লিখে রাখতেন। এই ডায়েরিগুলোই ছিল তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করার ক্ষেত্রে প্রধান সহায়ক।
তদন্তকারীরা তার কাছ থেকে শিশুদের ওপর যৌন নির্যাতনের বহু ছবি এবং ভিডিও উদ্ধার করেছেন। এছাড়াও, তার বাড়ি থেকে শিশুদের ব্যবহারের উপযোগী যৌন পুতুলও পাওয়া গেছে।
এই মামলার রায় ঘোষণার পর, ফরাসি চিকিৎসা ব্যবস্থা ব্যাপক সমালোচনার শিকার হয়েছে।
ভুক্তভোগী ও তাদের পরিবার অভিযোগ করেছেন, চিকিৎসা ব্যবস্থার দুর্বলতার কারণে অভিযুক্ত দীর্ঘদিন ধরে এই ধরনের অপরাধ চালিয়ে যেতে পেরেছে।
এমনকি, শিশু নির্যাতনের ছবি রাখার দায়ে ২০০৫ সালে একবার অভিযুক্তের সাজা হলেও, তাকে হাসপাতাল ও ক্লিনিকে কাজ চালিয়ে যেতে দেওয়া হয়।
আদালতে দেওয়া বক্তব্যে অভিযুক্ত জানিয়েছেন, তিনি তার কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত এবং ভবিষ্যতে ভালো মানুষ হিসেবে বাঁচতে চান।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৬ সালে এক তরুণীকে ধর্ষণ এবং নিজের দুই ভাইঝি ও আরও এক শিশুকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে অভিযুক্তকে ১৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।
নতুন এই সাজার মেয়াদ আগেরটির সঙ্গে একইসঙ্গে কার্যকর হবে।
এই ঘটনার পর ফ্রান্সের ন্যাশনাল অর্ডার অফ ডক্টরস এক বিবৃতিতে জানায়, তারা এই ঘটনায় গভীর দুঃখিত এবং অভিযুক্তকে দ্রুত চিহ্নিত করতে না পারায় তারা অনুতপ্ত।
তারা আরও জানায়, ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে তারা আরও সতর্ক থাকবে।
তথ্য সূত্র: পিপলস
