ফ্রান্সে শিশুদের ওপর যৌন নির্যাতন: কুখ্যাত সার্জন দোষী সাব্যস্ত!

ফ্রান্সের এক আদালত একজন অবসরপ্রাপ্ত সার্জনের বিরুদ্ধে প্রায় ৩০০ জনকে ধর্ষণের অভিযোগে ২০ বছরের কারাদণ্ডের রায় দিয়েছে। ভুক্তভোগীদের মধ্যে অনেকের বয়স ছিল ১৫ বছরের নিচে।

এই ঘটনাটি আধুনিক ফ্রান্সে শিশুদের ওপর যৌন নির্যাতনের সবচেয়ে বড় ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বুধবার (২৯ মে) দেশটির পশ্চিমাঞ্চলে এই রায় ঘোষণা করা হয়।

অভিযুক্ত ৭৪ বছর বয়সী জোয়েল লে স্কোয়ারনেক ১৯৮৯ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত হাসপাতালে কাজ করার সময় এই অপরাধগুলো করেন। অভিযোগ অনুযায়ী, তিনি অস্ত্রোপচারের সময় বা চেতনা ফেরার পর রোগীদের ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতন করতেন।

বিচার চলাকালীন, তিনি ২৯৯ জন রোগীকে ধর্ষণ বা যৌন নির্যাতনের কথা স্বীকার করেছেন। এর মধ্যে ১৫ বছরের কম বয়সী শিশুর সংখ্যা ছিল ২৫৬ জন।

আদালতে জোয়েল তার কাজের জন্য অনুশোচনা প্রকাশ করে বলেন, “আমি আমার কৃতকর্মের জন্য লজ্জিত। আমি তাদের এবং তাদের পরিবারের কাছে ক্ষমা চাই।”

তবে ভুক্তভোগী ও তাদের আইনজীবীরা জোয়েলের ক্ষমা প্রার্থনায় সন্তুষ্ট হননি। ভুক্তভোগীদের আইনজীবী থমাস দেলাবি অভিযুক্তকে ‘ইতিহাসের সবচেয়ে বড় শিশু যৌন নিপীড়ক’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

তিনি আরও বলেন, “ভুক্তভোগীরা তোমাকে কখনোই ক্ষমা করবে না।”

২০২০ সালে জোয়েল লে স্কোয়ারনেক-কে এর আগে আরও একটি মামলায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। সেসময় তিনি তার দুই ভাগ্নিসহ আরও চার শিশুকে ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতন করেছিলেন।

ওই মামলায় তার ১৫ বছরের কারাদণ্ড হয়েছিল। এই রায়ের ফলে তাকে এখন মোট ৩৫ বছর জেল খাটতে হবে।

এই মামলার রায় ঘোষণার পর ফ্রান্সের স্বাস্থ্যখাতে কর্মীদের নিরাপত্তা এবং শিশুদের প্রতি আরও বেশি মনোযোগ দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। কিভাবে দীর্ঘদিন ধরে একজন চিকিৎসক এমন অপরাধ করে গেলেন, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

এমনকি ২০০৫ সালে শিশু পর্নোগ্রাফির ছবি ডাউনলোড করার দায়ে অভিযুক্ত হওয়ার পরও কেন তাকে হাসপাতালে কাজ করতে দেওয়া হলো, তা নিয়েও আলোচনা চলছে।

এই ঘটনার কয়েক মাস আগে, ফ্রান্সের অ্যাভিগনন শহরে একটি আদালত বহু বছর ধরে এক নারীর ওপর সংঘটিত গণধর্ষণের ঘটনায় ৫১ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে।

ভুক্তভোগী নারী বিচার চলাকালীন তাঁর উপর হওয়া অত্যাচারের কথা সকলের সামনে তুলে ধরেন।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *