এক জন ব্রিটিশ কমেডিয়ানের ফ্রান্সের গ্রামীণ জীবনে মানিয়ে নেওয়ার এক ভিন্ন গল্প!
ফ্রান্সের লোর উপত্যকায় এক জন ব্রিটিশ কমেডিয়ান, ইয়ান মুর, তার পরিবারের সাথে বসবাস শুরু করার পর সেখানকার সংস্কৃতিতে নিজেকে খাপ খাওয়াতে বেশ বেগ পেতে শুরু করেছিলেন। নিজের ব্রিটিশ পরিচয় এবং দুর্বল ফরাসি ভাষার কারণে তিনি প্রায়ই নিজেকে আলাদা অনুভব করতেন।
কিন্তু এক আশ্চর্য ঘটনা তার জীবন বদলে দেয়, যখন তিনি বুঝতে পারেন যে তার বিশেষ পোশাক-পরিচ্ছদই তাকে স্থানীয়দের কাছে গ্রহণীয় করে তুলেছে।
ইয়ান মুর, যিনি মূলত একজন কমেডিয়ান, সবসময়ই অভিনব পোশাকে অভ্যস্ত ছিলেন। তার পছন্দের তালিকায় ছিল উজ্জ্বল রঙের স্যুট, ভিন্ন ধরনের কোট এবং আকর্ষণীয় অ্যাক্সেসরিজ। ফ্রান্সে আসার আগে তিনি হয়তো ভাবেননি যে এই পোশাকই একদিন তাকে সেখানকার মানুষের কাছাকাছি নিয়ে আসবে।
শুরুর দিকে, ইয়ান মুর চেষ্টা করেছিলেন স্থানীয় সংস্কৃতির সঙ্গে মিশে যেতে, কিন্তু তার ব্রিটিশ হাবভাব এবং দুর্বল ফরাসি ভাষার কারণে তা কঠিন হয়ে পড়েছিল। তিনি সবসময়ই মনে করতেন, তিনি যেন সবার থেকে আলাদা।
স্থানীয় “বুলোনারি”-তে (ফরাসি বেকারি) লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার সময়, তার এই ভিন্নতা আরও বেশি করে চোখে পড়ত। সবাই তাকে “সো ব্রিটিশ” (অতীব ব্রিটিশ) বলে ডাকত, যা আদতে ছিল ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ।
আস্তে আস্তে ইয়ান বুঝতে পারলেন, তার পোশাক-পরিচ্ছদ আসলে তার আত্মপরিচয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তিনি যেমনটা ছিলেন, সেভাবেই থাকতে শুরু করলেন।
এর ফলস্বরূপ, স্থানীয়রা তাকে আরও বেশি আপন করে নিতে শুরু করে। গ্রামের মানুষজন ইয়ানের ফ্যাশন সেন্সকে বেশ উপভোগ করতেন।
এমনকি, স্থানীয় কোনো অনুষ্ঠানেও যখন তিনি তার বিশেষ পোশাকে যেতেন, তখন তা সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করত। একবার, একটি অনুষ্ঠানে তিনি তার পছন্দের “টু-টোন বাস্কেট-উইভ লোফার” পরে গিয়েছিলেন।
সেখানকার এক উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা তাকে দেখে বলেছিলেন, “একজন ইংরেজকে এখানে আসতে দেখে ভালো লাগছে।” ইয়ান তখন কিছুটা কৌতুক করে উত্তর দিয়েছিলেন, “আপনি কী করে বুঝলেন আমি ইংরেজ?”
উত্তরে তিনি তার জুতার দিকে ইঙ্গিত করেন।
ইয়ান মুর-এর এই অভিজ্ঞতা আমাদের শিক্ষা দেয় যে, সংস্কৃতিতে মিশে যাওয়ার জন্য সবসময় বাইরের পরিবর্তনের প্রয়োজন হয় না।
অনেক সময় নিজের পরিচয়ের প্রতি অবিচল থাকাই অন্যদের কাছে আপনাকে গ্রহণীয় করে তোলে। আত্ম-স্বীকৃতি এবং নিজের প্রতি বিশ্বাস, যে কোনো সংস্কৃতিতে টিকে থাকার অন্যতম চাবিকাঠি।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান
 
                         
                         
                         
                         
                         
                         
				
			 
				
			 
				
			 
				
			