ঐতিহ্য ফিরিয়ে: ফ্রিক কালেকশনের পরিচালক কী বলছেন?

নিউ ইয়র্কের ফ্রিক কালেকশন, ইউরোপীয় শিল্পকলার এক উজ্জ্বল ভান্ডার, দীর্ঘ পাঁচ বছর সংস্কারের পর পুনরায় খুলছে। এই ঐতিহাসিক সংগ্রহশালাটি শুধু একটি জাদুঘর নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক সম্পর্কের এক জীবন্ত প্রতীক।

পরিচালক অ্যাক্সেল রুগার মনে করেন, বর্তমান অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এই সংগ্রহশালার শিল্পকর্ম, বিশেষ করে রেমব্রান্ড এবং ভার্মিরের মাস্টারপিসগুলো, দুই মহাদেশের মধ্যেকার বন্ধনকে আরও সুদৃঢ় করতে পারে।

ফ্রিক কালেকশন-এর এই পুনর্গঠন একটি বিশেষ সময়ে হচ্ছে, যখন বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে। এই সময়ে, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং শিক্ষা ক্ষেত্রকে অগ্রাধিকার দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা আরও বেশি।

উপ-পরিচালক জ্যাভিয়ের সলোমন মনে করেন, “বর্তমান বিশ্বে সংস্কৃতি এবং শিক্ষার গুরুত্ব কমে যাচ্ছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। এই ধরনের একটি স্থান মানুষকে সংস্কৃতি এবং শিল্পের গুরুত্ব সম্পর্কে নতুন করে ভাবতে সাহায্য করতে পারে।”

ফ্রিক কালেকশন-এর যাত্রা শুরু হয়েছিল শিল্পপতি হেনরি ক্লে ফ্রিকের সংগ্রহ দিয়ে। এই সংগ্রহশালাটি একসময় শহরের কোলাহল থেকে দূরে শান্তির আশ্রয়স্থল ছিল, যা একটি বৃহৎ পরিবারের মতো অনুভূতি দিত।

এখন, এটি আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে – ইউরোপীয় সংস্কৃতি এবং নেতৃত্বের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের গভীর শ্রদ্ধার একটি প্রমাণ হিসেবে।

এই সংগ্রহশালা পুনরায় চালু হওয়ার মুহূর্তে, বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য শুল্কের প্রভাব দেখা যাচ্ছে, যা শিল্পের বাজারকে আরও প্রভাবিত করতে পারে।

রুগার মনে করেন, “ফ্রিক, যিনি মূলত একজন মার্কিন শিল্পপতি ছিলেন, প্রথম দিকে ইংরেজি শিল্প এবং তাদের দেশের বাড়িগুলির নান্দনিকতার প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিলেন। এটি এখনকার মতো এতটা উদ্দেশ্যমূলক ছিল না, তবে আমেরিকানরা তাদের পূর্বপুরুষদের দিকে তাকাতেন এবং তাদের অনেকেই ইউরোপ থেকে এসেছিলেন।”

আসন্ন প্রদর্শনীতে ভার্মিরের ‘লাভ লেটার্স’ শীর্ষক চিত্রকর্মগুলো বিশেষভাবে স্থান পাবে।

সলোমন উল্লেখ করেন, যদিও নিশ্চিতভাবে বলা যায় না যে এই ছবিগুলোতে নারীরা চিঠি লিখছেন নাকি পাচ্ছেন, তবুও সপ্তদশ শতাব্দীর ঘরোয়া পরিবেশে চিঠি লেখা এবং আদান-প্রদান একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল।

তিনি আরও বলেন, “অতীতে আঁকা শিল্পকর্ম সবসময়ই প্রাসঙ্গিক থাকে, এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাদের গুরুত্বও পরিবর্তিত হয়।”

ফ্রিক কালেকশনের এই পুনর্গঠন ও নতুন প্রদর্শনী, নিঃসন্দেহে শিল্পপ্রেমীদের জন্য এক দারুণ সুযোগ। এটি শুধু ইউরোপীয় শিল্পকলার একটি উদযাপন নয়, বরং বিশ্বজুড়ে সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের গুরুত্বের প্রতিচ্ছবি।

তথ্য সূত্র: The Guardian

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *