যুদ্ধবিরতিতে রাজি না হলে রাশিয়ার উপর আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারির হুমকি দিয়েছে শিল্পোন্নত সাত দেশের জোট জি-৭। কানাডার পার্বত্য অঞ্চলে অনুষ্ঠিত জি-৭ এর বৈঠকে এই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়।
ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানে রাশিয়ার প্রতি এই কঠোর বার্তা দেওয়া হয়েছে।
বৈঠকে জি-৭ নেতারা স্পষ্ট করেছেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার ‘বর্বর যুদ্ধ’ বন্ধের চেষ্টা ব্যর্থ হলে তারা মস্কোর উপর চাপ আরও বাড়াতে সম্ভাব্য সব বিকল্প বিবেচনা করবে।
জি-৭-এর সদস্য দেশগুলো হলো কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান, যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্র।
বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, ইউক্রেনকে সমর্থনকারী দেশগুলো যেন দেশটির পুনর্গঠনে কোনো সুবিধা না পায়, তা নিশ্চিত করতে জোটবদ্ধভাবে কাজ করা হবে।
তবে, পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়াকে অস্ত্র সরবরাহ করছে বলে যে সব দেশের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে, তাদের নাম সরাসরি উল্লেখ করা হয়নি।
কানাডার অর্থমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া-ফিলিপ শ্যাম্পেইন এই সিদ্ধান্তকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
জি-৭ জানিয়েছে, রাশিয়া যতক্ষণ না যুদ্ধ বন্ধ করে ইউক্রেনকে ক্ষতিপূরণ দিচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের সম্পদ জব্দ করা হবে।
এদিকে, ইউরোপীয় পার্লামেন্ট রাশিয়ান সার আমদানির উপর শুল্ক আরোপের অনুমোদন দিয়েছে।
আগামী ১ জুলাই থেকে এই শুল্ক কার্যকর হবে এবং তিন বছর ধরে তা ৬ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে প্রায় ১০০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পাবে, যা বাণিজ্য বন্ধ করে দেবে।
জি-৭ সম্মেলনে রাশিয়ার তেলের দামের সীমা কমানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
বর্তমানে ব্যারেল প্রতি তেলের দামের সীমা ধরা হয়েছে ৬০ ডলার, যা কমিয়ে ৫০ ডলারে নামানোর প্রস্তাব আসে। তবে, যুক্তরাষ্ট্র এতে রাজি না হওয়ায় পরিকল্পনাটি চূড়ান্ত হয়নি।
যুদ্ধ বন্ধের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকলেও রাশিয়া এখনো অনড় অবস্থানে রয়েছে।
ভ্যাটিকান সিটি যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার জন্য একটি বৈঠকের আয়োজন করতে প্রস্তুত বলে শোনা গেলেও, ক্রেমলিন এখনো পর্যন্ত নতুন কোনো আলোচনার বিষয়ে রাজি হয়নি।
অন্যদিকে, রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয় দেশই এখনো পাল্টাপাল্টি হামলা চালাচ্ছে।
শুক্রবার সকালে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা রাতে মস্কো অঞ্চলের উপর দিয়ে যাওয়া ১১2টি ইউক্রেনীয় ড্রোন ভূপাতিত করেছে।
এর আগে, রাশিয়া ইউক্রেনের ডিনিপ্রোপেট্রোভস্ক অঞ্চলের পোক্রোভ শহরে একটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে বলে জানা গেছে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা