বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশগুলোর জোট জি-৭ এর আসন্ন শীর্ষ সম্মেলনটি এবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে কানাডার ক্যানানাসকিসে। এই সম্মেলনে ইসরায়েল-ইরান সংকট, ইউক্রেন যুদ্ধ এবং বাণিজ্য নিয়ে উত্তেজনা সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তবে সবার দৃষ্টি থাকবে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর, যিনি আবারও এই সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন।
কানাডায় অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এবারের জি-৭ সম্মেলনে প্রধান আলোচ্য বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতা, যা জ্বালানি তেলের দাম আরও বাড়াতে পারে। এছাড়াও, ইউক্রেন যুদ্ধ এবং বাণিজ্য বিষয়ক উত্তেজনা নিয়েও আলোচনা হতে পারে।
সম্মেলনে আগত নেতারা ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি প্রচেষ্টা বন্ধ করা, উত্তেজনা কমানো এবং কূটনৈতিক সমাধানের পথ খোলা রাখার বিষয়ে গুরুত্ব দেবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সাত বছর আগে কুইবেকে অনুষ্ঠিত জি-৭ সম্মেলনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি ছবি বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। যেখানে দেখা যায়, ট্রাম্প তৎকালীন জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মেরকেল এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সঙ্গে একটি যৌথ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করতে রাজি না হওয়ায় তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের এই ধরনের অনীহা এবং বহুপাক্ষিক সম্পর্কগুলোতে তার আগ্রহের অভাব এবারও সম্মেলনে প্রভাব ফেলতে পারে।
তবে এবারের সম্মেলনে কিছুটা ভিন্নতা থাকতে পারে। সম্মেলনের আয়োজকরা বলছেন, তারা এবার সংক্ষিপ্ত এবং সুনির্দিষ্ট বিবৃতি তৈরি করতে আগ্রহী, যা বিতর্ক এড়িয়ে বিভিন্ন দেশের মধ্যেকার সম্পর্ককে আরও সুসংহত করতে সাহায্য করবে।
ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে, ইউরোপীয় দেশগুলো রাশিয়াকে আরও বেশি চাপ দিতে চাইছে, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এখনো সে বিষয়ে তেমন কোনো পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না।
সম্মেলনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি-ও যোগ দেবেন এবং ট্রাম্পের সঙ্গে তার একটি বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে।
ধারণা করা হচ্ছে, এই বৈঠক থেকে ইউক্রেন কিছুটা ইতিবাচক ফল আশা করতে পারে। এছাড়া, সম্মেলনে বাণিজ্য নিয়েও আলোচনা হবে, যেখানে বিভিন্ন দেশের মধ্যে বিদ্যমান শুল্ক এবং বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে নতুন করে আলোচনা হতে পারে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্প সাধারণত বহুপাক্ষিক ফোরামগুলোতে খুব একটা আগ্রহী নন। তিনি এসব সংগঠনকে আমেরিকার ক্ষমতা এবং প্রভাব বিস্তারের পথে বাধা হিসেবে দেখেন।
তাই, এবারের সম্মেলনে ট্রাম্পের আচরণ কেমন হবে, তা দেখার জন্য বিশ্ববাসীর আগ্রহ রয়েছে। সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বাণিজ্য সম্পর্ককে আরও সুসংহত করার ওপর জোর দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
জি-৭ সম্মেলনে বিভিন্ন দেশের মধ্যেকার আলোচনা এবং সিদ্ধান্তগুলো বিশ্ব অর্থনীতি এবং আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতার ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্যেও এই সম্মেলন তাই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
কারণ, বিশ্ব অর্থনীতির গতিপ্রকৃতি, বাণিজ্য চুক্তি এবং আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিষয়ক সিদ্ধান্তগুলো আমাদের দেশের অর্থনীতি ও উন্নয়নের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন