গ্যালাপাগোস দ্বীপে ৫ দিন সাগরে ভেসে থাকার পর ৫ মৎস্যজীবীর উদ্ধার।
পেরু ও কলম্বিয়ার পাঁচজন মৎস্যজীবী, যারা প্রায় ৫৫ দিন সমুদ্রে ভেসে ছিলেন, অবশেষে ইকুয়েডরের একটি টুনা মাছ ধরার নৌকার সাহায্যে গ্যালাপাগোস দ্বীপে ফিরে এসেছেন। ইকুয়েডরের নৌবাহিনী সূত্রে এই খবর জানা গেছে।
জানা গেছে, মাঝ সমুদ্রে তাদের নৌকার যন্ত্রাংশ বিকল হয়ে যাওয়ায় তারা যোগাযোগ এবং দিক নির্ণয়ের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন। এরপর বৃষ্টি ও ইঞ্জিনের মরচে পড়া জল পান করে এবং মাছ সেদ্ধ করে খেয়ে তারা survival-এর লড়াই চালিয়ে যান।
জানা গেছে, মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময়ে পেরুর রাজধানী লিমার দক্ষিণে অবস্থিত পুকুসানা উপসাগর থেকে যাত্রা শুরু করার দুই দিন পরই তাদের নৌকার অল্টারনেটরের (alternator) ক্ষতি হয়। এর ফলে নৌকার ব্যাটারি অকেজো হয়ে যায় এবং নৌকার বাতি ও অন্যান্য সরঞ্জাম বন্ধ হয়ে যায়।
ইকুয়েডর নৌবাহিনীর ক্যাপ্টেন মারিয়া ফারেস জানান, তাদের নৌকায় কোনো স্টার্টার ছিল না। এর ফলে তারা দিক নির্ণয় করতে পারছিলেন না।
জীবনধারণের জন্য তারা ইঞ্জিনের মরচে পড়া জল পান করতে বাধ্য হয়েছিলেন। এছাড়া, যখন কোনো মাছ তাদের নৌকার কাছাকাছি আসত, তারা সেটি ধরে সেদ্ধ করে খেতেন।
উদ্ধার হওয়া জেলেদের মধ্যে তিনজন পেরুর এবং দুইজন কলম্বিয়ার নাগরিক। বর্তমানে তারা সুস্থ আছেন এবং তাদের নিজ নিজ দেশে ফিরিয়ে নেবার জন্য স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করা হচ্ছে।
এই ঘটনার আগে, চলতি বছরের শুরুতে, ৬১ বছর বয়সী আরেকজন পেরুর মৎস্যজীবী, ম্যাক্সিমো নাপা, একাই ৯৫ দিন সমুদ্রে ভেসে ছিলেন।
তাকেও একটি ইকুয়েডরীয় নৌযান উদ্ধার করে এবং মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময়ে তিনি পরিবারের কাছে ফিরে আসেন।
গ্যালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জ, যা ইউনেস্কো কর্তৃক স্বীকৃত একটি বিশ্ব ঐতিহ্যপূর্ণ স্থান, দক্ষিণ আমেরিকার উপকূলের কাছে প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থিত।
এখানে বন্যপ্রাণীর এক বিশেষ সমাহার দেখা যায়। এই ঘটনার মাধ্যমে আবারও সমুদ্রের প্রতিকূলতা এবং জেলেদের জীবন সংগ্রামের বিষয়টি সামনে এসেছে।
বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের জেলেরা প্রায়ই প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও সমুদ্রে হারিয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে থাকেন। তাদের জীবনও একইভাবে কঠিন।
তথ্য সূত্র: সিএনএন